সময় এখন ডেস্ক:
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক দায়েরকৃত দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি আছেন। এমন সময় বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে খালেদার শারীরিক অবস্থা, চিকিৎসা সেবা ও তার মামলা নিয়ে নালিশ করেছে দলটি।
রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে এই বৈঠক হয়। সেখানে সরকার বিএনপি নেত্রীকে নিয়ে ‘অমানবিক’ ধারার রাজনীতি করছে বলে তাদের কাছে দাবি করে দলের শীর্ষ নেতারা। এ সময় খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশের বিশেষায়িত হাসপাতালে নেয়ার অপরিহার্যতার কারণ তুলে ধরেন তারা।
১ ঘণ্টার ওই বৈঠকে জাপান, নরওয়ে, প্যালেষ্টাইনের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্থান, মরক্কো, সুইজারল্যান্ডসহ ২১টি দেশের কূটনীতিক অংশ নেন। এছাড়াও ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি সংস্থার কূটনীতিকরা।
এতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শুনানি, উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের অনাগ্রহসহ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের কাছে আবেগি ভাষায় তুলে ধরেন নেতারা।
বৈঠক শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি নিয়মিত বৈঠক। প্রতি মাসেই আমরা কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে থাকি। আজকের বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থতা ও তার মুক্তির প্রক্রিয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠেছে।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি নেতা জেবা খান, মীর হেলাল, ইসরাক হোসেন প্রমুখ।
সূত্র জানায়, বৈঠকের প্রায় পুরোটা সময়ই বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য ও মামলার বিষয়ে সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে কূটনীতিকদের কাছে নালিশ করেন বিএনপি নেতারা। শুরুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান।
তার বক্তব্যের পরে কূটনীতিকরা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, তার চিকিৎসা নিয়ে নানান প্রশ্ন রাখেন। কয়েকজন কূটনীতিক জানতে চান- সরকারী হাসপাতালে কেনো তার চিকিৎসা সম্ভব না? জবাবে বিএনপি নেতারা সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে নেতারা কূটনীতিকদের বলেন, তিনি এতোই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এখন কক্ষেও চলাচল করতে পারছেন না। তাকে সবসময়ই সাহায্য করতে হচ্ছে। তার শোল্ডার ফ্রোজেন হয়ে যাচ্ছে, বাম হাত, ডান হাত নাড়াতে পারছেন না, হাঁটতে পারছেন না। মাথাও সোজা করে রাখতে পারছেন না। যিনি সুস্থ অবস্থায় গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে হেঁটে হেঁটে কারাগারে গেলেন। আজকে তাকে হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
1