৩ দিনে কক্সবাজারে ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা, জরিমানাও হলো

0

সময় এখন ডেস্ক:

টানা ৩ দিনের ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। পাশাপাশি চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে।

হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, নিরাপত্তা বাড়ানো গেলে বিনোদনপ্রেমীরা আরও বেশি ভ্রমণে আগ্রহী হবেন। আর ভবিষ্যতে নানা অব্যবস্থাপনা দূর করতে সবাইকে সমন্বয় করার পরামর্শ চেম্বার কর্তৃপক্ষের।

এবার বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক মিলে টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ছুটে আসেন ৫ লাখের বেশি ভ্রমণপিপাসু। সৈকতে সাগরের নীল জলরাশিতে মেতে ওঠেন তারা। ওয়াটার ও বিচ বাইকের পাশাপাশি চড়েছেন ঘোড়াতেও। আর প্রিয় মুহূর্তগুলো বন্দি করেছেন ক্যামেরার ফ্রেমে।

পাশাপাশি কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিলেন সৈকত পাড়ের বার্মিজ পণ্যের দোকান, আচার, শুঁটকি ও শামুক-ঝিনুকের দোকানে। ফলে ব্যস্ত সময় পার করেছেন দোকানদাররাও। তারা বলছেন, আশানুরূপ ব্যবসা হয়েছে তাদের। দোকানিরা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের সর্বোচ্চ ব্যবসা হয়েছে। প্রত্যাশা থেকে বেশি ব্যবসা হয়েছে।

সমুদ্রসৈকতে রয়েছে সহস্রাধিক ফটোগ্রাফার, তারা বলেছেন, দিন প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে, আমরা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করেছি।

এদিকে ওয়াটার ও বিচ চালকরা বলেছেন, প্রতিদিন আগে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা আয় হতো। এখন আমরা ২ থেকে ৩ দিনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করেছি। আবার কেউ কেউ ১ লাখ টাকাও ব্যবসা করেছে এ ৩ দিনে।

টানা ছুটিতে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস ও কটেজ ছিল মানুষে ঠাসা। অনেকে রুম না পেয়ে রাত্রিযাপন করেছেন বাসেই। তাই আগামীতে ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা আরও বাড়ানো গেলে আরও বেশি মানুষ সৈকত শহরে ভ্রমণে আগ্রহী হবেন বলে মনে করে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের হোটেল কক্স-টুডের ম্যানেজার আবু তালেব শাহ বলেছেন, প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশও অবশ্যই ইতিবাচক রয়েছে। আমার মনে হয়, তারা আরেকটু লোকবল বাড়ালে, তারা জিনিসটাকে আরও এক্সপ্লোর করতে পারে।

আরও নিরাপত্তা বেড়ে যেতে পারে। ফলে যখন নিরাপত্তা বেড়ে যাবে, তখন পর্যটকরা এখানে অনায়াসে ঘুরবে, এবং কক্সবাজারে বেড়ানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকায় অন্তত ৪ লাখ পর্যটক অবস্থান করছেন। এর মধ্যে হোটেল ও মোটেলে উঠতে পেরেছেন সর্বসাকুল্যে ২ লাখ পর্যটক।

এই পরিস্থিতিতে হোটেল-মোটেলগুলোত মাত্রাছাড়া অযৌক্তিক ভাড়া আদায়ের অভিযোগ মিলেছে। অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে অবস্থিত হোটেল সী পার্ল ও হোটেল ওপেলায় পৃথক অভিযান চালায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ অভিযানে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তারা হোটেল দুটিকে সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ সময় দুজন পর্যটকের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম জানান, কক্সবাজারে আসা বিপুল পর্যটক আগমনের সুযোগে একটি চক্র নানা অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে।

ফলে শুক্রবার দিনব্যাপী কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনে পর্যটকদের যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য হোটেল ও রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এদিকে কক্সবাজারের চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ পরিচালক আবিদ আহসান সাগর জানালেন, রেকর্ড পর্যটক আগমনে ৩ দিনে ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। আর অব্যবস্থাপনা দূর করতে সবাইকে সমন্বয় করার পরামর্শ তার।

তিনি বলেছেন, এবারের অব্যবস্থাপনাটা অনাকাঙ্ক্ষিত। আশা করি, ভবিষ্যতে এটি আর না হয়। সরকারের সকল বিভাগ, আমাদের ব্যবসায়ীদের সকল সংগঠন ও যারা ব্যবসায়ী আছেন, তারা সমন্বয় করে নিবেন। যাতে সমস্যাগুলো বা অসুবিধাগুলো আরও পুনরায় না হয়।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সৈকতের পাড় ঘেঁষে রয়েছে ১ হাজারের বেশি বার্মিজ পণ্যের দোকান। রয়েছেন সহস্রাধিক ফটোগ্রাফার, ওয়াটার ও বিচ চালক, কিটকট ব্যবসায়ী এবং হকার।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!