ফেনী প্রতিনিধি:
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার সাথে জড়িত থাকার ঘটনায় শম্পা ওরফে চম্পাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ৬ এপ্রিল বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারছে বলে রাফিকে খবর দেয় শম্পা ওরফে চম্পা। আর শম্পার কাছে এই খবরে শুনে ভবনের ৪ তলায় গিয়েছিলেন রাফি।
এর আগে, ৪ এপ্রিল সিরাজের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে যান শাহাদাত হোসেন শামীম ও মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র নুরুদ্দিনসহ ৪ জন। সেখানে লম্পট সিরাজ তাদের ‘একটা কিছু করে’ রাফিকে শায়েস্তা করার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী শাহাদাত হোসেন শামীম কেরোসিন ঢেলে রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ এপ্রিল সকালে রাফি পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে সেখানেই ভবনের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে তাকে আগুনে পোড়ানো হয়।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২ ছাত্রীর মাধ্যমে ৩টি বোরকা আনা হয়। আনা হয় কেরোসিন তেল। ৬ এপ্রিল বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে বলে শম্পা ওরফে চম্পা নামে এক ছাত্রীর দেয়া সংবাদে ভবনের চারতলায় যান রাফি। সেখানে আগে থেকেই বোরকা পরে লুকিয়ে ছিল শাহাদাতসহ ৪ জন। তারা রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। কিন্তু রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারই ওড়না দিয়ে বেঁধে গায়ে আগুন দিয়ে দেয়।
রাফি হত্যায় মোট ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৮ আসামির মধ্যে পরিকল্পনাকারী শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), নুরুদ্দিন (২০), কাউন্সিলর মুকছুদ আলম (৪০), জোবায়ের আহম্মেদ, জাবেদ হোসেন (১৯) ও আফছার উদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।
একই ঘটনায় আগে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার সিরাজ উদ দৌলাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামি হাফেজ আব্দুল কাদের পলাতক। নুরুদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আব্দুল কাদেরসহ আরো একজন মিলিত হয়ে পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার পরই পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআইয়ের ৬টি ইউনিট তদন্তে অংশ নেয়। ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। তদন্তে জড়িতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
৭ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও একজনকে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে। একজনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৫ জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।