ফেনী প্রতিনিধি:
একই দিনে ফেনীতে আরেকটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বলাৎকারের শিকার হলো। ৩য় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মো. হারুন (৩০)। দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রহিমপুর আরাবিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা এতিমখানার নূরানী বিভাগের শিক্ষক মাওলানা মো. হারুন ৩য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ১০ বছর বয়সী এক ছাত্রকে গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মাদ্রাসার কক্ষে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। পরে ওই শিশুকে বলাৎকার করে এবং কাউকে না বলার জন্য ভয় দেখায়।
ওই শিশুটি বিকাল ৫টার দিকে বাড়ি গিয়ে কাঁদতে থাকে। তার বাবা জিজ্ঞেস করলে সে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করবে না ও শিক্ষকের বিষয়টি জানায়। পরে ওই শিশুর পিতা মো. শাহ আলম বাদী হয়ে শিক্ষক মাওলানা মো. হারুনকে আসামী করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই দিন রাতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের মাদ্রাসা থেকে মধ্যম ছনুয়া ইউনিয়নের মোল্লা বাড়ীর মো. মোস্তফার ছেলে মাওলানা হারুনকে গ্রেফতার করে।
গতকাল বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে হারুনকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের। হারুন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, হারুন ঘটনায় জড়িত থাকার স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, একইদিন গত মঙ্গলবার ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার অন্তর্গত রাজাপুর ইউনিয়নের কোরেশমুন্সি এলাকার দারুল কোরআন ওয়াস ছুন্নাহ্ নামক কওমী মাদ্রাসায় একইভাবে অপর একটি শিশু বলাৎকারের শিকার হয়। এই ঘটনায় মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা শহিদুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। বিস্তারিত: ‘ওস্তাদের সেবা’র নামে বলাৎকারের শিকার শিশু, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক
প্রসঙ্গত, শিশু যৌন হয়রানি একটি বড় সমস্যা আমাদের দেশের জন্য। পরিবারের বয়স্ক সদস্য, শিক্ষক, হুজুর এমনকি অপরিচিতদের দ্বারাও বহুভাবে শিশুরা শারীরিকভাবে হালকা বা গুরুতরভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়। অনেক সময় শিশুদের যৌনতা সম্বন্ধে ধারণা তৈরীর আগেই বয়স্ক কারো দ্বারা যৌন হয়রানির স্বীকার হলে তাকে বলা হয় পেডোফিলিয়া।