শিক্ষকের পিটুনিতে মাদ্রাসাছাত্রের চোখ জখম, শিক্ষককে হাতুড়িপেটা

0

সময় এখন ডেস্ক:

জাওয়াদ হোসেন রামিম (১১) নামক এক মাদ্রাসাছাত্রকে ভোর ৪টায় ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসান তার মাদ্রাসা পরিচালক ফজলুল হক। পড়ার সময় তাকে আবার ঘুমিয়ে পড়তে দেখে তিনি বেত্রাঘাত শুরু করেন। এ সময় নিজেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে রামিম। এক পর্যায়ে শিক্ষকের হাতের আঙুল ঢুকে শিশুটির ডান চোখে মারাত্মক জখম হয়ে রক্তজমাট বেঁধে যায়।

এরপর রক্তাক্ত এবং আহত রামিম মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী তার মামার বাড়িতে গেলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। একই সময় ওই হাসপাতালের সামনে শিক্ষক ফজলুল হক তার ছাত্র রামিমকে ওষুধ কিনে দিতে যান। তখন সেখানে উপস্থিত থাকা রামিমের মামা শামিম মিয়া ওই শিক্ষককে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন।

গতকাল ভোরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। আহত রামিম ময়মনসিংহ সদর এলাকার চরগোবিন্দপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে।

ঈশ্বগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছেই ফজলুল হক প্রতিষ্ঠিত হামিদিয়া হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটির পরিচালকও তিনি। এ মাদ্রাসায় প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। গত ৩ বছর ধরে মাদ্রাসাটির হিফজ বিভাগে পড়ে জাওয়াদ হোসেন রামিম।

মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থী, রামিমের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে প্রতিদিনকার মতো রামিমসহ সব শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসান মাদ্রাসার পরিচালক ফজলুল হক। পড়ার সময় রামিম ঘুমিয়ে পড়ছিল। এটা দেখে বেত দিয়ে তাকে পেটাতে শুরু করেন ওই শিক্ষক। নিজেকে রক্ষা করতে রামিম বেতটি ধরতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক চড় মারে তার মুখে। তাতে শিক্ষকের একটি হাতের আঙুল তার ডান চোখে আঘাত করে।

পরে সকাল ৯টার দিকে রামিম তার মামার বাড়িতে চলে যায়। তার মামা শামিম মিয়া দ্রুত তাকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় ওই শিক্ষক রামিমের জন্য ওষুধ কিনে দিতে এলে শামিম ক্ষুব্ধ হয়ে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় শিক্ষক ফজলুল হককে প্রথমে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ফজলুল হককে নিয়ে এলাকায় এর আগে অন্তত ৬টি সালিশ বৈঠক বসেছে। শিক্ষকের জমির ধান না কেটে না দেয়া, তার ব্যক্তিগত কাজ না করাসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন তিনি।

আহত শিক্ষার্থী রামিম জানায়, ভোরে তাকে ঘুম থেকে তোলার পর সে পড়তে বসে। কিন্তু পড়তে বসে একটু ঘুমিয়ে পড়ায় তাকে হুজুর মারতে শুরু করে। ওই সময় তার চোখে হুজুরের আঙুল লেগে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই সজিব ঘোষ বলেন, শিক্ষক ইচ্ছকৃতভাবে ছেলেটির চোখের ওই অবস্থা করেনি। কিন্তু পরবর্তীতে ছেলেটির মামা শিক্ষকের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বসেন। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!