টিপস: বিমান ভ্রমণে যা করবেন, যা করবেন না

0

লাইফ স্টাইল ডেস্ক:

বিমানযাত্রার সময় কিছু নিয়ম-কানুন আছে যেগুলো মেনে চললে সবার উপকার হয়। কিছু কাজ আছে যা করা বারণ, আবার কিছু করণীয়ও রয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

বিমানের শৌচাগারের ব্যবহার

বিমানের শৌচাগারে বেশি সময় না নেওয়াই ভালো। এছাড়া অন্য কেউ পরিস্কার করবে ভেবে বাসার শৌচাগারের মতো নোংরা অবস্থায় রেখে আসা উচিত নয়। এছাড়া নিজের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিমানের শৌচাগারে যেকোনো ধরণের যৌনতা থেকে বিরত থাকা উচিত।

তীব্র গন্ধযুক্ত কিছু নিয়ে বিমানে না ওঠা

মনে রাখবেন, তীব্র গন্ধযুক্ত কোনো আতর বা পারফিউম মেখে বিমান ভ্রমণ না করাই ভালো। এতে আপনার জন্য অন্য যাত্রীরা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। কারণ বিমানের অভ্যন্তরে বদ্ধ একটি পরিবেশ থাকে বাতাসের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। তাই তীব্র গন্ধ আরও তীব্রতর হয়ে অপর যাত্রীদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এছাড়া বিমানে এমন খাবার নিয়ে ওঠা উচিত নয়, যা তীব্র গন্ধ ছড়ায়।

নিজের সন্তানদের দেখে রাখুন

বিমানে ওঠার আগে নানা ধরনের নিয়ম-কানুন মানতে গিয়ে হয়তো আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন; কিন্তু সন্তানকে দেখে রাখাটাও আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তেমনি অন্য বাচ্চারা দুষ্টুমি করলে আপনার উচিত তাদের বাবা-মাকে বিষয়টি জানানো। তবে বিমানে অন্য কারো বাচ্চাকে ধমক দেওয়ার সঠিক জায়গা নয়।

মনে রাখবেন, শিশুদের প্রতি বিমান পরিচালনা সংস্থাগুলো অত্যন্ত নমনীয় মনোভাব পোষণ করে। শিশুদের প্রতি কেউ অমানবিক আচরণ করলে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে বিবেচিত হতে পারে।

ধুমপান করবেন না

যদি কোনোক্রমে আপনার কাছে ধুমপান করার সামগ্রী থেকে যায় বিমানে ওঠার পরেও। ভুলক্রমেও তা বের করবেন না। বিমানে ধুমপান করা গর্হিত কর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। কেউ কেউ গোপনে টয়লেটে কাজটি করার চেষ্টা করেন। তবে বিমানে স্মোক ডিটেক্টর থাকায় তারা ধরা পড়ে যান।

তাছাড়া ধুমপানের কারণে বিমানে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই বিমান নিরাপদে অবতরণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, যদি ধুমপায়ী হয়ে থাকেন। এছাড়া বিমান-কর্মীদের সহায়তা নিতে পারেন। তাদের কাছে এক ধরণের চুষে খাওয়ার পিল পাওয়া যায়, যা ধুমপানের ইচ্ছাকে সাময়িকভাবে বিরত রাখতে পারে।

ভেবে রাখুন বিমানে কীভাবে ঘুমাবেন

বিমানে উঠে ঘুমানোর জন্য আপনি একটি নেক পিলো (ঘুমানোর জন্য বিশেষ এক বালিশ, যা ঘাড়ে জড়িয়ে নেওয়া যায়) চাইতেই পারেন। নেক পিলোর বিশেষ সুবিধা হলো ঘুমের মধ্যে আপনার মাথা সহযাত্রীর ঘাড়ে চলে যাবে না।

মনে রাখবেন, যদি আপনি বিমানের মাঝখানের আসন পান তাহলে ট্রে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমানো উচিত নয়। এতে আপনার দুই পাশের যাত্রীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

মাঝখানের আসনের যাত্রীর আর্মরেস্টের অধিকার বেশি

বিমানের আসনের সঙ্গে লাগানো হাত রাখার জায়গাকে আর্মরেস্ট বলা হয়। বিমানের জানালার পাশের আসন বা করিডরের পাশের আসনের মতো হাত-পা ছড়ানোর সুযোগ মাঝখানের আসনের যাত্রীর কম। তাই তাকে আর্মরেস্টের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে বেশি কথা না বলে তাকে একটু বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া উচিত।

সঠিক সময়ে আসন থেকে উঠুন

ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য আসন ছাড়ার আগে আরেকবার ভেবে দেখুন। যদি দেখেন বিমানের আসনের মধ্যবর্তী পথে বিমানবালার হাতে খাবারের ট্রে, তাহলে আপনার আসনে বসে থাকা উচিত। বিমানবালার হাত থেকে খাবার সংগ্রহ না করে আসন ছাড়া ঠিক নয়।

মালপত্র সঠিক জায়গায় রাখুন

বিমানে মাথার ওপর মালপত্র রাখাকে ‘বিন’ বলা হয়। আর বিমানের প্রতিটি ব্যাগের জন্যই মূল্য পরিশোধ করতে হয়। তাই প্রতিটি ‘বিন’ই মূল্যবান। আনুভূমিকভাবে নিজের ব্যাগ বিনে রেখে অন্যের জায়গা দখল করা উচিত নয়। ব্যাগগুলো উল্লম্বভাবে রাখুন। যদি আপনার কাছে দুটি ব্যাগ থাকে, তাহলে একটি ব্যাগ আপনার পায়ের কাছে রাখুন।

বিমানে হেলান দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন

বিমানে আপনি চাইলে আধশোয়া হয়ে ঘুমাতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আসনটিকে আধশোয়া করে শোয়ার উপযুক্ত করে নিতে হবে। আর সেটি করার সময় আপনার পেছনের যাত্রীর দিকে খেয়াল রাখুন।

আপনার আসনটি আধশোয়ার উপযুক্ত করতে গিয়ে সেটি যেন আবার তার পানীয়, ল্যাপটপ বা পায়ের সঙ্গে না লেগে যায়। তাই আসনটি হেলানোর আগে আপনার পেছনের যাত্রীকেও একবার সতর্ক করুন।

ফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহার

বিমানে ওঠার পরপরই আপনার মোবাইল ফোনটিকে অ্যারোপ্লেন মুডে নিয়ে নিন। বিমানে সময় কাটানোর জন্য অনেক যাত্রীই তার ফোনে বা ল্যাপটপে গান শোনেন। এ সময় হেডফোন ব্যবহার করুন। অন্য যাত্রীরা বিরক্ত হয়, এমন আচরণ করবেন না।

বিমান-কর্মীদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন

টাকা দিয়ে টিকেট কিনে ভ্রমণ করছেন বলে নিজেকে মহারাজা ভাবা থেকে বিরত থাকুন। বিমান-কর্মীদের অন্যতম কাজ হচ্ছে বিমানের সব নিয়ম-কানুন আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া। সিটবেল্ট বাঁধা, খাবার দেওয়া, বিমান অবতরণের আগে আরেকবার সিটবেল্ট বেঁধে নেওয়ার পরামর্শ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিমান-কর্মীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করেন।

কাজেই তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের ফলে তারা বিরক্ত হতে পারেন। এতে বিমান উড্ডয়নে দেরিও হতে পারে। তাছাড়া কোনো ধরণের অযাচিত, অভদ্র, অশোভন আচরণ কিংবা গর্হিত কাজের ক্ষেত্রে বিামান পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো যে কোনো যাত্রীকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে। এতে পরবর্তী সময়ে আপনার বিমানযাত্রা বিঘ্নিত হতে পারে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!