স্পোর্টস ডেস্ক:
পেশাদারিত্বের যুগে ব্যক্তিগত আবেগ অনুভূতির কোনো স্থান নেই। আর তাই ব্যক্তিগত শোকের কথা কাউকে জানাননি ইংলিশ পেসার জফরা আর্চার। কেউ আঁচও করেননি, বিশ্বকাপ ফাইনালে যিনি সুপার ওভারে বল করেছেন, তার ব্যক্তিগত জীবনে টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে কত বড় তুফান বয়ে গিয়েছে!
ঘটনাটা ঘটে, গত ৩১ মে সন্ধ্যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের পরের দিন। বার্বেডোজের সেন্ট ফিলিপে নিজের বাড়ির সামনে ২ আত-তায়ীর গু-লিতে মৃত্যু হয় আশানসিয়ো ব্ল্যাকম্যানের। যিনি সম্পৃর্কে জফরার কাজিন হন।
টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরে বিষয়টা প্রকাশ্যে আনলেন জফরার বাবা ফ্রাঙ্ক। বললেন, জফরা আর আশানসিয়ো সমবয়সী। ঘনিষ্ঠও ছিল। ঘটনার আগে কয়েক দিন ধরে ওরা ম্যাসেজে কথা বলেছে। জানি এই খবরে কতটা মুষড়ে পড়ে ছেলে। কিন্তু তার পরেও খেলা চালিয়ে গিয়েছে।
জফরার মনে হয়েছিল, সবাই ঘটনাটার কথা জানলে বারবার এটা নিয়ে কথা হত। যা ক্রিকেট থেকে তার ফোকাস সরিয়ে দিতে পারত। তাই এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলবেন না- এটাই ঠিক করে ফেলেন ইংল্যান্ডের এই তরুণ পেসার। তার খেলা দেখেও এত বড় মানসিক ধা-ক্কার আঁচ পাওয়া সম্ভব ছিল না। মিচেল স্টার্ক ও লকি ফার্গুসনের মতো তিনিও টুর্নামেন্টে ২০ এর বেশি উইকেট নেন।
জফরার লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ দিয়ে ইংরেজদের তথাকথিত ‘অভিজাত ক্রিকেটমহলে’ পাকা জায়গা করে নেওয়া।
জফরার বাবার কথায়, ৮ বছর থেকেই ছেলের স্বপ্ন ছিল ইংল্যান্ড দলে খেলার। অনেকেই প্রশ্ন তুলতেন, আমার ছেলে কতটা ব্রিটিশ তা নিয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপে জফরা যেভাবে খেলল, তাতে ইংরেজ তরুণরাই অনুপ্রাণিত হবে। এখনও ইংল্যান্ডে ক্রিকেট অভিজাতদের খেলা। জফরার জন্যই হয়তো ইংল্যান্ডে ক্রিকেট আমজনতার খেলা হয়ে উঠবে।
সেমিফাইনালের পরেই ওকে বলেছিলাম, এখন তোমার সময়। নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য ঝাঁপাও। তাহলেই একমাত্র ইংল্যান্ডের ক্রিকেট-নায়করা বুঝতে পারবে তোমার মূল্য- জানান জফরার বাবা ফ্রাঙ্ক।