সময় এখন ডেস্ক:
স্থাপত্যশৈলী ও নান্দনিকতার জন্য যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টের (রিবা) দেওয়া বিশ্বসেরা ভবনের পুরস্কার জিতে নিয়েছে সাতক্ষীরা শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল।
শ্যামনগর ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালকে ২০২১ সালের বিজয়ী ঘোষণা করে রিবা গতকাল।
এর আগে ২০২১ সালে রিবা অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন পায় হাসপাতাল ভবন। দৃষ্টিনন্দন হাসপাতালটির ডিজাইন করেছেন বিশিষ্ট স্থপতি কাশেফ চৌধুরী। তার প্রতিষ্ঠান আরবানার অধীনে তৈরি নকশা অনুসারে নির্মিত হয়েছে এই হাসপাতাল।
প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা সাতক্ষীরার মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবায় আশীর্বাদ হয়ে এসেছে হাসপাতালটি। উপজেলা সদরের কাছে সোয়ালিয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে সরকারি মেডিক্যাল কলেজসম স্বাস্থ্যসেবা।
শ্যামনগর ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। শেষে হয় ২০১৮ সালে। এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ২২ জুলাই।
ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের পরিচালক অসীম রোজারিও বলেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত খবর থেকে বিষয়টা জানতে পারি।
তার হাসপাতাল পুরস্কার জয় করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত লবণাক্ত এলাকায় অবস্থিত এই হাসপাতাল নির্মাণ করেছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ।
২০ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাবিত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আমরা কাজ করে দেখেছি, নিজেদের ছোট ছোট সমাধানেও দরিদ্র মানুষকে বেগ পেতে হয়। কাশেফ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।
তিনি স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। গুণগত মান নিশ্চিত করেছেন এবং ফ্রেন্ডশিপের মান-সম্মানকে আরও বাড়িয়েছেন। আমাদের জন্য তিনি সত্যিই এমন এক স্থপতি, যিনি নিজের মনে করে যত্নের সঙ্গে ডিজাইন করে আমাদের সরবরাহ করেছেন।
পর্যাপ্ত আলো, বাতাস, মাটি, পানির সমন্বিত পরিবেশে শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সৌন্দর্য হয়ে উঠেছে আরও জীবন্ত।
অসীম রোজারিও আরও বলেন, ৬ জন চিকিৎসক, ১২ জন নার্স এবং অন্যান্য সহকারীর সমন্বয়ে ২০ শয্যার হাসপাতালে রয়েছে ৪টি ওয়ার্ড। ৩টি অপারেশন থিয়েটারের মাধ্যমে বেশিরভাগ অস্ত্রোপচার হচ্ছে এখানে।
প্রত্যন্ত এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ এবং অ্যাম্বুলেন্স সুবিধায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টা। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ খোলা থাকে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
দন্ত, চোখের ছানি, জরায়ু ক্যান্সার, হৃদরোগ, মুগুর পা, ঠোঁটের তালুকাটা, বার্ন, অর্থপেডিক, ডায়াবেটিস, ফিজিওথেরাপি, স্ত্রীরোগ এবং শিশুরোগ নিয়ে বছরে ১২ থেকে ১৫টি বিশেষ ক্যাম্প পরিচালিত হয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের উদ্যোগে।
শুধু হাসপাতাল কমপ্লেক্সে নয়, শ্যামনগরের বিভিন্ন ইউনিয়নে ছাত্রছাত্রী এবং নারীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ক্যাম্পেইন।