সময় এখন ডেস্ক:
একসময়কার তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে চিনতো বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে ৩ বছরের শাসনামলে সেই অপবাদ দূর করে যখন মাথা তুলে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন দেশকে, ঠিক সে সময় কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রে চলে যেতে হয় বহু ক্রোশ পেছনে।
সেই অবস্থা থেকে দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ আর সম্মানজনক অবস্থানে উঠে আসতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত এবং সম্মানের আসনে আসীন।
তবে দেশবিরোধরা বারবার বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের গৌরবজনক স্থাপনা পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ ছাড়ের আগেই কাল্পনিক দুর্নীতির গাল-গল্প ছড়ানো হয়। পরবর্তীতে সেসব গপ্পো যে ভুয়া, তা প্রমাণিত হয়। তবে দৃঢ়তার সাথে জানান দেন শেখ হাসিনা, কারো ঋণে নয়, নিজস্ব অর্থায়নেই গড়া হবে এই সেতু।
শুরুতেই শেখ হাসিনার এই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে ব্যাপক তামাশাও করে দেশবিরোধী শক্তি। তাদের নানা ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার পদদলিত করে পদ্মার বুকে আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। তবে এখনও থেমে নেই তাদের অপপ্রচার। সম্পতি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে ঋণ নিয়ে- এমন একটি অপপ্রচার চালাচ্ছে কুচক্রী মহল।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে ড. ইউনূস, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী কর্তৃক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংকের কাছে পাঠানো ‘বায়বীয়’ দুর্নীতির অভিযোগটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় কানাডার আদালতে।
কানাডার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার মামলাটি নাকচ করে দেন। এরপরই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পুরো পদ্মা সেতু করার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশ্বের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং একটি প্রকল্প এই পদ্মা সেতু। অকল্পনীয় সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের, এই স্থাপনা বাস্তবায়নে।
এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প। শুরু থেকেই এর পেছনে ষড়যন্ত্র করে আসছে দেশবিরোধী শক্তি। উন্নতির পথযাত্রায় বাধা হয়ে আসে নানা সমস্যা। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী এবং বিশ্ব ব্যাংকে তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে নানা অপপ্রচার চালাতে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তারা গুজব ছড়ায়- সেতুর পিলার নির্মাণে নদীতে কিনা মানুষের মাথা ফেলতে হবে। এসব ভিত্তিহীন গুজব যখন মাত্রাতিরিক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তখন সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। জনগণকে কুচক্রী মহলের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়। গুজব ও অপপ্রচার করে জনমনে ভীতি সৃষ্টিকারী কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
সেই কুচক্রীরা সকল ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে এবার অপপ্রচার চালাচ্ছে পদ্মা সেতুর ঋণ নিয়ে। যা পুরোপুরি মিথ্যা। সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে এমন একটি বিশাল স্থাপত্য তৈরি করা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্ত শেখ হাসিনার সরকার তা সাধন করে দেখিয়েছে। সেতুর সাফল্যের সাথে সাথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, দ্বিতল এই সেতু বাংলাদেশের উন্নতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশের অর্থনীতিতে এর অবদান বিপুল। যোগাযোগ ব্যবস্থা বেগবান হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ বাড়বে। দুই পাড়ের ২৩টি জেলার জনগণের জীবনমানের পরিবর্তন ঘটবে। দেশ অর্থনীতিতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আর এসবই কুচক্রীদের গাত্রদাহের কারণ।