স্পেশাল করেসপন্ডেন্স:
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান রাজনীতিতে আসেন ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার পর। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির প্রভাবে তিনি এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের আশায় তাকে দলের দায়িত্ব দিয়ে খালেদা জিয়া চরম ভুল করেছেন বলেও নানা গুঞ্জন রয়েছে বিএনপিতে।
তারেকের অদূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বিএনপির রাজনৈতিক অধঃপতন ঘটেছে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও অপরাজনৈতিক কৌশলের কারণে বিএনপি রাজনীতিতে বারবার হোঁচট খাচ্ছে। আর লন্ডনে বসে তারেক রহমান দলকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তারেক রহমানের দুর্নীতি, দুঃশাসন ও সীমাহীন লুটপাটের চিত্র আজও ভোলেনি দেশবাসী। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সন্ত্রাসের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারেক রহমান।
বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির প্রচলন, বিরোধী দল দমনে বোমা-সন্ত্রাসের ব্যবহার তারেক রহমান দেখিয়েছেন। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিরোধী দল ও মতের মানুষদের নৃশংসভাবে পথ থেকে সরিয়ে দেয়ার রাজনীতি করেছেন তারেক রহমান। তারেকের সম্পদ লিপ্সার সঙ্গে মিলে যায় তার চাওয়া-পাওয়া।
আর সরকারি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজটি কীভাবে হাসিল করে নিতে হয় সেটিও খুব ভালোভাবেই জানতেন তিনি। তারেক ও তার সহযোগীদের দুর্নীতি সেসময় এমনই মাত্রা ছাড়ায় যে উইকিলিকসেও তার কিছু নমুনা দেখা যায়।
সেসময় খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাসের সঙ্গে ২০০৫ সালের ১৩ই মার্চ আলাপে বলেছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত তারেক রহমানকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করে চলেছেন। ২০১১ সালে উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন গোপন নথিপত্রে এই বিষয়টি উঠে এসেছিল।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের আরেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ারটি ২০০৮ সালের ৩রা নভেম্বর ওয়াশিংটনে পাঠানো এক বার্তায় উল্লেখ করেন দুর্নীতিগ্রস্ত ও উগ্র এমন এক সরকার যে তার নিজের দেশের জনগণ ও সম্পদ লুণ্ঠন করে- তার প্রতিনিধিত্ব করেন তারেক। ২০১১ সালের ৩০শে আগস্ট উইকিলিকস রাষ্ট্রদূতের পাঠানো এই বার্তাটি ফাঁস করে দেয়।
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘তারেক রহমান সরকারি তহবিল থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার চুরি করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যমপন্থী (মডারেট) এই দেশটিতে স্থিতিশীল সরকার ব্যবস্থা বজায় রাখার প্রচেষ্টা নষ্ট করে দিচ্ছে।’
বিএনপির রাজনৈতিক দুর্দশার দায়ভার বর্তায় তারেকের ওপরই। রাজনীতিতে বিএনপির নাকানিচুবানি খাওয়ার জন্য তারেক রহমানের অপকর্মই দায়ী বলে নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন খোদ দলটি ছেড়ে যাওয়া একাধিক নেতা। বিএনপির উত্তরণের জন্য তারেক রহমানের প্রশ্নবিদ্ধ নেতৃত্বকেও দায়ী মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।