বিশেষ প্রতিবেদন:
রাজশাহী জেলা বিএনপি একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সমালোচনা, লোভ, কোন্দল আর অনিয়মের কারণে দলবিমুখ হয়ে পড়েছেন ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। পরিস্থিতি এমন যে- রাজশাহী বিএনপিতে এখন ব্যানার ধরার জন্যও কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না।
২০১৬ সালের ২৭শে ডিসেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে নাদিম মোস্তফাকে বাদ দিয়ে তোফাজ্জল হোসেন তপুকে সভাপতি ও মতিউর রহমান মন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ঐ সময় নাদিম মোস্তফা ও তোফাজ্জল হোসেন তপুর সমর্থক নেতা-কর্মীরা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করেন।
এছাড়া মাসখানেক চলে বিএনপি কার্যালয়ে তালা, পাল্টা তালা মারার ঘটনা। ঐ পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও।
এর আগে ২০০৯ সালেও গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছিল রাজশাহী জেলা বিএনপিতে। ঐ সময় মিজানুর রহমান মিনু ও নাদিম মোস্তফার নেতৃত্বে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয় জেলা বিএনপি। এতে দেখা দেয় সাংগঠনিক দুর্বলতা।
নেতা-কর্মীরা জানান, জেলা বিএনপির অনেক নেতাই রাজশাহী মহানগরীতে বসবাস করেন। তারা তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ না রাখায় দলে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলাসহ পৌরসভায় বর্তমানে বিএনপির কার্যত কোনো কমিটি নেই। নেতা-কর্মীরাও বছর দশেক আগেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এ কারণে জেলার কোথাও বিএনপির কোনো সাংগঠনিক কর্মসূচি নেই। এমনকি ব্যানার ধরার কর্মী খুঁজে পাওয়াও কঠিন।
রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কে এম সাজেদুর রহমান বলেন, কীভাবে নেতৃত্বের লোভ-কোন্দল আর নেতাদের অদূরদর্শিতায় রাজশাহী বিএনপি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে তা নিজের চোখে দেখেছি। দলের দুর্দিনেও কতিপয় নেতা টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের কাছে পদ বিক্রি করেছেন, যা ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মানতে পারেননি।
অনেকেই ক্ষোভ অভিমানে দল ছেড়েছেন। যারা এককালে দলের সব সুবিধা লুটেছেন, তারাই দুর্দিনে দল ও নেতা-কর্মীদের ফেলে পালিয়েছেন। এসব কারণেই দলবিমুখ হয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা।