রাষ্ট্রের জ্বালানী নিরাপত্তায় সরকারের গৃহীত মহাপ্রকল্পগুলো সম্পর্কে কতটা জানেন?

0

সময় এখন:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ বোলালে তথাকথিত ভাড়াটে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের নানারকম বিভ্রান্তিমূলক এবং মনগড়া আগডুম-বাগডুম তথ্যের বাগাড়ম্বর দেখা যায়। কিন্তু প্রকৃত চিত্রটা পাওয়া যাবে না। জ্বালানী খাতের অবকাঠামো তৈরিতে দেশে ভেতরে ভেতরে নীরবে যে উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চলছে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাবেন না এই তথাকথিত বিশেষজ্ঞদের নিবন্ধে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কী ঘটছে, একটু সংক্ষিপ্ত চিত্র দেখা যাক।

রাষ্ট্রের জ্বালানী নিরাপত্তায় দেশে দুটি বড় প্রকল্পের কাজ বর্তমানে প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমদানি করা জ্বালানি তেল জাহাজ থেকে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে খালাস করার জন্য গভীর সমুদ্রে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে। শেষ হবে সামনের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পটি চালু হলে ১১ দিনে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল খালাস করা যায়, সেটির সময় কমে আসবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায়। বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। লাগবে না লাইটারেজ জাহাজে করে তেল খালাস করা, বন্ধ হয়ে যাবে চুরি।

সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বয়াটি মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পাশে স্থাপিত হয়েছে। জাহাজ থেকে ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রোডাক্ট সরাসরি ভেসেলে করে মুরিং পয়েন্টে আনা হবে। সেখান থেকে পাম্প করে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রথমে তেল আনা হবে মহেশখালীর কালারমারছড়ার স্টোরেজ ট্যাংকে। সেখান থেকে আবার পাম্প করে পাইপলাইনে পাঠানো হবে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে।

এই প্রকল্পের জন্য ৬টি স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩টি পরিশোধিত তেলের জন্য ও ৩টি অপরিশোধিত তেলের জন্য। প্রতিটি পরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার ঘনমিটার। অপরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাংকারের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার ঘনমিটার। অফশোর পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে ১৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। ১৭টি এইচডিডিসহ অনশোরে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে।

৭ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক দিচ্ছে ৪৫০০ কোটি টাকা, যা মাত্র ২% সুদে ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এই প্রকল্প শেষ হলে ইস্টার্ন রিফাইনারীর পরিশোধনের ক্ষমতা হবে বছরে ৪৫ লক্ষ টন এবং জ্বালানী ধারন ক্ষমতা ৬০ দিনে উন্নীত হবে।

অপর প্রকল্প পতেঙ্গার ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটারের তেল সঞ্চালন পাইপলাইনের কাজ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা আছে। এই পাইপলাইন চালু হলে বিপিসির তেল পরিবহণের ট্যাংকারগুলো আর প্রয়োজন হবে না। এখন এইভাবে তেল পরিবহনে বছরে ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়। এই প্রকল্পগুলো চালু হলে জ্বালানী খাত পুরোপুরি অটোমেশন সিস্টেমে চলে যাবে।

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর। এই কাজগুলো আসলে আরও অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। শেখ হাসিনার ক্ষমতাগ্রহণের আগে ২৮ বছর যারা সরকারে ছিল, কেউ চিন্তাই করেনি এই সেক্টরকে অটোমেশনে নিয়ে দেশের জ্বালানী নিরাপত্তা তৈরী করা। আজ তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। তবুও কি বন্ধ হবে মিথ্যাচার আর অপপ্রচার?

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!