আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরা ঘ্রায়েব। ২১ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি তরুণী গত ২২ আগস্ট মা’রা যান। কারণ, তার ভাইয়ের মার থেকে বাঁচতে গিয়ে ৩ তলার বাসার ব্যালকনি থেকে নিচে পড়ে যান তিনি। এতে তার মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কিন্তু কেন তার ভাই তাকে মারছিল?
এর কারণ জানা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে। খবরে বলা হয়েছে, একজন পুরুষের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন ইসরা ঘ্রায়েব। এরপর তা ইন্সটাগ্রামে প্রকাশ করেন তিনি। এতে তরুণীর পরিবার ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ইসরাকে শাস্তি দিতে তার ভাইকে নির্দেশ দেয় ইসরার পরিবার। এরপরই তার ভাই শাস্তিস্বরূপ ইসরাকে মারধ’র করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ও ইসরা বেশ কয়েকটি পোস্ট দেন। এক পোস্টে তিনি লেখেন- আমাকে শক্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে মেসেজ পাঠাবেন না। আমি শক্ত আছি। আমাকে যারা মেরেছেন আল্লাহ তাদের বিচার করবেন।
এসব পোস্ট দেখে ইসরার ভাই আরও কয়েকজন পুরুষ আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতালে যান এবং ইসরাকে ফের মারধ’র করেন।
যে পুরুষের সঙ্গে ইসরা ছবি তুলেছিলেন, সেই পুরুষটি সম্প্রতি তাকে বিয়েরও প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি ফিলিস্তিনের পুলিশ। তবে ইসরার পরিবারের দাবি, ইসরার মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী নন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইসরার মৃত্যু হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনায় সম্মান রক্ষার্থে নি’র্যাতনে মৃত্যুকে অনার কিলিং বলা হয়ে থাকে। ইসরার মৃত্যুতে বার্লিনে বিক্ষোভ করেছেন একদল ফিলিস্তিনি। রামাল্লাহ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস স্টাডিজের সমাজবিজ্ঞানী আয়াদ বারঘুতি বলেছেন, অনার কিলিংয়ের ঘটনা ফিলিস্তিনি সমাজের কারণে ঘটতেই থাকবে।
অনার কিলিং নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন ফিলিস্তিনের তথ্যচিত্র নির্মাতা ইমতিয়াজ আল-মাঘরাবি। তিনি বলছেন, ফিলিস্তিনে সম্মান রক্ষার্থে অপরাধ করা ব্যক্তিরা অনেক সময় অল্প শাস্তি পেয়ে থাকেন। কারণ, ধর্ম প্রথা আর ঐতিহ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি সমাজ প্রভাবিত। আইনের চেয়ে সেখানে এসবের মূল্য বেশি।
যদিও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি অনার কিলিং-সংক্রান্ত আইনকানুন আধুনিক করলেও তার কার্যকারিতা খুবই সীমিত।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে