সময় এখন:
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার চিরায়ত ভঙ্গিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো কিছু অতিরঞ্জিত এবং ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরে দাবি করেন, দেশের মানুষ যখন দুর্বিষহ অবস্থায় আছে, ঠিক তখন সরকারের সচিবদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি ও সুইমিং পুল নির্মাণের পেছনে বিপুল অর্থব্যয় করা হচ্ছে… ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে তিনি তথ্যসন্ত্রাসী পত্রিকা- প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের কিছু ভিত্তিহীন খবরও তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যের সপক্ষে।
এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মুখোমুখি হন আজ। এসময় সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য নির্মিবত্য সরকারি বাড়িতে সুইমিং পুল নির্মাণের সংবাদটি সঠিক নয় বলে নিশ্চিত করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মূলত দুই সচিবের বাড়ির প্রস্তাবটি চূড়ান্ত নয়। আর চূড়ান্ত হলেও সেখানে কোনো ব্যক্তিগত সুইমিং পুল থাকছে না বলেও জানান তিনি।
আজ সোমবার (৩১শে অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকের বিষয় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ‘বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দেশও যখন আর্থিক চাপে, তখন দুই জন কর্মকর্তার জন্য এত ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামম বলেন, ‘এটি একটি প্রাথমিক বিষয়। এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু আসেনি। তাছাড়া সেখানে যেকোনও ধরনের সুইমিং পুলের কথা পরিষ্কার নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি সুইমিং পুল নির্মাণ করতেই হয়, তাহলে ওখানে কয়েশ’ বাড়িঘর আছে, যেখানে সরকারি কর্মকর্তারা বসবাস করেন। তাদের সবার ব্যবহারের জন্য একটি কমন সুইমিং পুল করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’
এ সময় খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাড়িতে বাড়িতে সুইমিং পুল নির্মাণ করে তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে না। ওখানে যে ৫০০-৬০০ কর্মকর্তা আছেন, তাদের সবার জন্য কমন কোনও সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কি না, সেটা বিবেচনার করার কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেখানে যাদের অ্যালটমেন্ট আছে, তারা এবং তাদের সন্তানরা ওখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন। কারণ, অফিসার্স কোয়ার্টার্সে তো বাইরের লোক আসতে পারবেন না।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘এটা আলোচনায় আসছে তিন-চার বছর আগে। আর তা নির্দিষ্ট করে কারও বাড়ি করার জন্য না। এমনকি ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে যে ৬টি বড় ভবন আছে, সেগুলো ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো সেই ১৯৫০ সালের সময়ের বাড়ি। আসলে সবগুলোই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। ইতোমধ্যেই সংসদ উপনেতার বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ, এগুলো সেই ১৯৪০, ১৯৪৫ সালের বাড়ি। বাড়িগুলো একটা একটা করে সব নতুন করে তৈরি করা হবে।
উল্লেখ্য, রাজাকার তালিকার ৭১০নং-এ থাকা রুহুল আমিন চখা রাজাকারের পুত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের বিপরীতে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে সচিবদের বাড়ি ও সুইমিং পুল নির্মাণ প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। যাতে ইন্ধন যুগিয়েছে তথ্যসন্ত্রাসী প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গং।