২১ আগস্ট ভুয়া কাগজ নিয়ে চট্টগ্রামে ভিড়েছে ২টি বিদেশি জাহাজ!

0

সময় এখন ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক ও দেশি আইন লঙ্ঘ’ন করে কর্ণফুলী নদীতে সম্প্রতি ক্যামেরুনের (এফভি উইন্ড সি) ও (এফভি উইন্ড ভিউ) পতাকাবাহী ২টি জাহাজ অনুপ্রবেশ করে। মাছ ধরার ওই জাহাজ দুটির স্থানীয় এজেন্ট ইন্টারমোডাল প্রাইভেট লিমিটেড মেরামতের অজুহাত দেখিয়ে সম্পূর্ণ ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হাম’লার দিন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করায়।

২৬ আগস্ট জাহাজ দুটি বন্দর ত্যাগের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে এখনো বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করেনি। উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছিল না জাহাজ দুটির।

সূত্র জানায়, জাহাজ দুটির কাগজপত্রে ইতোমধ্যেই ব্যাপক ত্রুটিসহ টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে ‘পোর্ট ক্লিয়ারেন্স’ পরিবর্তন করা হয়েছে। এমনকি পোর্ট ক্লিয়ারেন্স অনুযায়ী ২৬ আগস্ট জাহাজ দুটির কম্বোডিয়ায় যাওয়ার কথা থাকলেও এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে অপেক্ষা করছে। প্রতিটি জাহাজে ৮ জন করে নাবিক রয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেছে সরকার।

গতকাল এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সচিব রিয়াল অ্যাডমিরাল (অব) মো. খোরশেদ আলমসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌবাহিনী, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর এবং কোস্টগার্ডের সরেজমিন তদন্তে জাহাজ দুটিতে মেরামতযোগ্য কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। ত্রুটিপূর্ণ এবং সন্দেহযুক্ত কাগজপত্রের ওপর ভিত্তি করে জাহাজ দুটিকে বন্দরে ভেড়ার ছাড়পত্র দেওয়ায় জড়িত কাস্টম কর্মকর্তাদের বিরু’দ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী খসরু বলেন, ট্রলার দুটি মিথ্যা ডিক্লারেশন দিয়ে ঢুকেছে এবং তা তদন্ত করে ধরা হয়েছে।

সবার সিদ্ধান্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সোম অথবা মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে এবং কমিটির সদস্য সংখ্যা ৭ থেকে ৯ জন হতে পারে।

ট্রলার দুটি কোন দেশের জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যামেরুনের পতাকা নিয়ে তারা ঢুকেছে। তবে সে দুটি পতাকাও নামিয়ে ফেলেছে।

ট্রলার দুটি থেকে নিরাপত্তাগত কোনো হুম’কি নেই জানিয়ে খসরু বলেন, যখন আমরা জানতে পেরেছি, তখন ট্রলার দুটি যেন মুভ না করতে পারে এবং কোনো কিছু আনলোড করতে না পারে, তার ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রতি জাহাজে ৮ জন করে নাবিক ছিল। কার্গো কী ছিল, তা পরিষ্কার নয়। তবে কিছু নেট বা জাল রয়েছে। মেরামতের কথা বলে বন্দরে ভেড়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে তারা এটা চাইতে পারে। তবে মেরামতের কথা বললেও জাহাজে কোনো ত্রুটি ছিল না। কোন উদ্দেশ্যে তারা ঢুকেছে, তা তদন্ত করতেই আমরা কমিটি গঠন করতে যাচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে যদি কোনো মাছ ধরা ট্রলার মেরামতের কথা বলে বা যে কোনো কথা বলে বাংলাদেশে ঢুকতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন !
  • 68
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!