রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. বিথীকা বণিকের বিরু’দ্ধে নিজ বিভাগের উচ্চমান সহকারী জেবুন নেসাকে হ’ত্যার হুম’কি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই কর্মচারী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে নগরীর মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরু’দ্ধে ঔ’দ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে এনে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিভাগীয় সভাপতি ড. বিপুল কুমার বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী জেবুন নেসা বলেন, বুধবার দুপুরে সংস্কৃত বিভাগের সভাপতি ড. বিপুল কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে অধ্যাপক ড. বিথীকা বণিক অসদাচরণ ও অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলতে থাকেন। আমি তখন লাঞ্চ করছিলাম।
এ সময় তিনি আমাকে ‘তুই ফকিন্নির বাচ্চা, ছোট লোকের বাচ্চা, তুই এখন চেয়্যারমানের চামচা হয়েছিস’ ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করতে থাকে। অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামনে আমাকে নানা ধরনের হুম’কি দিয়ে এক পর্যায়ে বলে ‘তুই নিচে নাম, তোকে জ’বাই করে ফেলব’। এরপর থেকে আমি, ৩ ছেলে মেয়ে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষক ও সংস্কৃত বিভাগের সভাপতি ড. বিপুল কুমার বিশ্বাস বলেন, অফিস কক্ষে লাঞ্চের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সে সময়ে ড. বিথীকা বণিক আমার কক্ষে ঢুকে আপত্তিকর কথা বলতে বলতে টেবিলের ওপর থাকা এসির রিমোট যন্ত্র আমাকে লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারে এবং টেবিলের উপর থাকা অন্যান্য জিনিসপত্রও ছুঁড়তে থাকে।
ইতোপূর্বেও ড. বিথীকা বণিক বিভাগের একাডেমিক মিটিংয়ে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং মিটিং ভণ্ডুলের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ড. বিথীকা বণিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সিনিয়র হওয়ার পরও ড. বিপুল বিশ্বাস ন্যূনতম সম্মান দেয় না। বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে রাগের কারণে রিমোট ছুঁড়েছি।
কর্মচারীকে হ’ত্যার হুম’কির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গালিগালাজ করেছি। সম্ভবত আমার সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীরা তাকে হ’ত্যার হুম’কি দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে রাবি ভিসি অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. বিথীকা বণিকের বিরু’দ্ধে সভাপতি ড. বিপুল কুমার বিশ্বাস একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৪ ড. বিথীকা বণিক ভাষা বিভাগের সভাপতি থাকাকালীন ৩১ জন শিক্ষকের অনাস্থার প্রেক্ষিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়া মুন্নুজান হলের আবাসিক শিক্ষক থাকাকালেও তার বিরু’দ্ধে নানা অভিযোগ ওঠায় সেই দায়িত্ব থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল।