গাজীপুর প্রতিনিধি:
স্ত্রী হালিমা আক্তার ও সন্তান মায়াকে অবহেলায় ফেলে রেখে চলে যান বাবা হাবিবুর রহমান। তারপর অন্য এক নারীকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। একমাত্র সন্তান ১০ বছর বয়সী মায়কে সাথে নিয়ে ফিরে আসেন হালিমা পিতৃগৃহে। সেখানে বসবাস করেই স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ নেন তিনি। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
আর এমন অবস্থায় সেই অভাবী মায়ের কাছে রসমালাই খাওয়ার আবদার জানায় মেয়ে মায়া।
অভাবের তাড়নায় সন্তানের আবদার পূরণ করতে হিমশিম খায় হালিমা আক্তার। এরপরও সামনের মাসের বেতন পেয়ে মায়ার রসমালাই খাওয়ার আশা পূরণ করবেন বলে জানান মা হালিমা আক্তার।
নাছোড়বান্দা মায়া তা মানতে নারাজ। তাকে আজই রসমালাই খাওয়াতে হবে। এভাবে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে ২ দিন না খেয়ে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করার মানসে আম গাছে ঝুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহ’ত্যা করে মায়া।
শনিবার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রাম থেকে গাছে ঝুলন্ত মায়ার মর’দেহ উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। মায়া শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হবির মেয়ে। সে ধনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্বজনদের বরাত দিয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এস.আই) মেনহাজ উদ্দিন বলেন, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর হালিমা খাতুন সন্তান মায়াকে নিয়ে গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট মেডিকেল মোড় এলাকায় বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। জৈনাবাজার এলাকায় একটি কারখানায় চাকরি করতেন।
কয়েকদিন ধরে মায়া রসমালাই খাবে বলে মায়ের কাছে বায়না ধরে। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে গত ২ দিন ধরে কিছু খায়নি মায়া।
শনিবার সকালে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ের একটি আম গাছে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহ’ত্যা করে মায়া। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে মর’দেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মায়ার মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়।
12