সময় এখন ডেস্ক:
আসামিদের কাছ থেকে ইয়া’বা জব্দের পর তাদের ছেড়ে দিয়ে সেই ইয়া’বা ভাগবাটোয়ারা করে নিতেন তারা। এরপর ইয়া’বাগুলো বিক্রি করে দিতেন। এমনই এক প্রস্তুতির সময় গ্রেপ্তার ৩ পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা হলেন- গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী (৪৪), এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল (২৩) ও নায়েক মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৭)।
রোববার ১ দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষে না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক পরিদশ চন্দ্র।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত শুক্রবার ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে তুলে ফের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক পরিদশ চন্দ্র। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন ওই ৩ জনের বিরু’দ্ধে ফের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওই মামলায় আরও ২ পুলিশকে শনিবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তারা হলেন- এপিবিএনের কনস্টেবল মো. রনি মোল্লা (২১) ও কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলাম (২৩)।
উত্তরা পূর্ব থানার পক্ষে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জালাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলায় গ্রেপ্তার ৫ জনই ২ দফা রিমান্ড শেষে বর্তমান কারাগারে রয়েছেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) রাতে এপিবিএনের ৪ পুলিশ কর্মকর্তা এবং গুলশান থানার এক এএসআই-কে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দপ্তরের ব্যারাক ভবনের ৪র্থ তলার বাথরুমের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়া’বার ভাগবাটোয়ারা করছেন।
তখনই তাদের বিরু’দ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সেখানে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর।
অভিযানে বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, কনস্টেবল রনি মোল্লা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পায় তারা। এরপর তাদের নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা’ করা হয়। বিস্তারিত পরিচয় নেয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে। তার পরিহিত ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়া’বা উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চালানো হয় মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে আরও ৩৯৪ পিস ইয়া’বা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসা’বাদের পর শরিফুলের কাছ থেকে ইয়া’বা বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসা’বাদ করা হয় শরীফুলকে। জিজ্ঞাসা’বাদে সে পুলিশকে জানায়, সে রনি মোল্লার কাছ থেকে ১৮ হাজার ৫০০ টাকায় ১৫০ পিস ইয়া’বা কিনেছে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় রনিকে।
সর্বশেষ প্রশান্তকে জিজ্ঞাসা’বাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসা’বাদে সে জানায়, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়া’বাগুলো উদ্ধার করা হয়।
তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার কাছে থাকা ২০০ পিস ইয়া’বা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখে। বাকি ১৫০ পিস নেয় জাহাঙ্গীর আলম।
তাদের বিরু’দ্ধে মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর ৩৬ (১) ও ৪১ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
102