চট্টগ্রাম ব্যুরো:
প্রতিদিনের মতো সকাল সকাল থানায় এসে অফিসে বসার আগেই মুঠোফোনে পাওয়া এক ক্ষুদেবার্তা টনক নাড়িয়ে দিল চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের।
কেউ একজন লিখেছেন, ‘নগরের মেনকা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী পারুলের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।’ মুঠোফোনের ক্ষুদেবার্তায় পাওয়া সেই সংবাদ রুখে দিয়েছে পারুলের বাল্যবিয়ে।
আগামী শুক্রবার ১৫ বছর বয়সী পারুল আক্তার শাহিদার সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল নগরের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা মফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. আরিফের (২৪)। পারুলের স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে মুঠোফোনের ক্ষুদেবার্তায় তা জানায় কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনকে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফোর্স পাঠিয়ে বর ও কনেপক্ষকে ডেকে আনা হয় থানায়। পরে তাদের বোঝানো হয় বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে। দুই পক্ষই তাদের ভুল বুঝতে পেরে এখনই পারুলের বিয়ে না দেয়ার বিষয়ে সম্মত হন। সিদ্ধান্ত হয় পারুলের পড়ালেখা চালু রাখার এবং প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেয়ার।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমার মুঠোফোনে আসা একটি ক্ষুদেবার্তায় পারুলের বিয়ের খবর পাই। পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে উভয় পরিবারকে বুঝিয়ে থানায় নিয়ে আসে। আমরা তাদের বোঝাতে সমর্থ হয়েছি বিয়ের জন্য পারুল এখনও প্রাপ্তবয়স্ক নয়।
আরিফ-পারুলের বিয়ে হবে, তবে তা পারুলের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পরেই। দুই পরিবারই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। তারা বিয়ের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি হয়েছেন। এছাড়া পারুলের পড়ালেখা অব্যাহত রাখার কথা দিয়েছেন।
কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় পাল বলেন, ওসি স্যারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত সহকারী হোসেনকে নিয়ে পাথরঘাটায় বরের বাড়ি ও হাশেম কলোনিতে কনের বাড়িতে যাই। উভয় পরিবারকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝাই। পরে রাত ৯টার দিকে থানায় এসে তারা উভয়পক্ষ এ বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার দিয়েছেন।