সময় এখন ডেস্ক:
দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা সদস্য ভাষাসৈনিক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ডা. এম রফিকুল বারী আর নেই। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃ’ত্যুবরণ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ শুক্রবার বাদ জুম্মা মহাখালী ডিওএইচএস মসজিদে যানাজা শেষে বনানী সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম রফিকুল বারী ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ছাত্রাবস্থায় পিতার পথ অনুসরণ করে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তাঁর আইনজীবী পিতা মৌলভী আবদুল বারী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার দিন থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালে মৃ’ত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ডা. রফিকুল বারী ১৯৫২ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় বাঙালীর ভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যোগ দেন।
১৯৮৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়ার আগের প্রায় ৮ বছর তিনি ছিলেন ঢাকা সিএমএইচের চিফ সার্জন। প্রথিতযশা অনেক চিকিৎসকের শিক্ষক এবং মেন্টর ছিলেন তিনি। তাঁর উদ্ভাবিত বেশ কিছু ‘সার্জিক্যাল প্রসিডিওর’ পরবর্তী প্রজন্মের সার্জনদের বেস্ট প্র্যাক্টিসের অংশ হয়ে গিয়েছিলো।
ডা. রফিকুল বারী যশোর সিএমএইচে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭৯ সালের জানুয়ারীতে চুয়াডাঙায় এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁর ও তাঁর চিকিৎসক দলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সে সময় সংক’টাপন্ন অনেক যাত্রীর প্রাণরক্ষা পায়। এই কৃতিত্বের জন্য পরবর্তীকালে তিনি রাষ্ট্রপতির বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন।
ডা. রফিকুল বারী মৃ’ত্যুকালে তাঁর রত্নগর্ভা স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, ৫ সন্তান ও ৬ নাতি-নাতনী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে ড. শামস এল আরেফিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের গ্র্যাজুয়েট ও জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ডক্টরেট ও আইসিডিডিআর’বি এর বিজ্ঞানী ও মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর।
তাঁর কন্যাদের মধ্যে ডা. নাহলা বারী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের গ্র্যাজুয়েট ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ও শমরিতা মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর। আরেক কন্যা ডা. শায়লা ইসলাম ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা ডেন্টিষ্ট। কনিষ্ঠ কন্যা সামীনা বারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েট ও বর্তমানে সফটওয়্যার প্রোগ্রামার হিসেবে নিউ ইয়র্কে কর্মরত।
উনার ছোট ছেলে শামস রাশীদ জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ এর গ্র্যাজুয়েট, সাবেক ব্যাংকার ও পরবর্তীতে ব্যবসায়ী, শাহবাগ প্রতিবাদের কর্মী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট।
তাঁর মেয়ের-জামাইদের মধ্যে মোঃ আতিকুল ইসলাম ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি। আরেক জামাই আবু নোমান মাহমুদুল্লাহ বুয়েটের গ্র্যাজুয়েট এবং বর্তমানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের সাথে কর্মরত।
উনার পুত্রবধূদের মধ্যে ডাঃ সোফিয়া আন্দালিব সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের গ্র্যাজুয়েট ও মাইক্রোবায়োলজিষ্ট ও উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর এবং সুস্মিতা খান সমাজবিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদ ও ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনাতে গবেষক হিসেবে কর্মরত।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
4.7K