প্রবাস ডেস্ক:
সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের নারী কর্মীদের ফেরত আসার ১১টি কারণ চিহ্নিত করেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সংসদীয় কমিটির সুপারিশে এই কারণ চিহ্নিত করে একটি প্রতিবেদনও তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সরকার অনুমোদিত যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি ওই নারী কর্মীদের সৌদি আরব পাঠিয়েছে, ওই এজেন্সিগুলোর লাইসেন্স বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৫ম বৈঠকে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকে নারী কর্মী নিপী’ড়নের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রাখা রয়েছে।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৬ আগস্ট একদিনে সৌদি আরব থেকে সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফেরেন ১১১ নারী কর্মী। মূলত বি’কৃত যৌ’ন নির্যা’তন, খেতে না দেওয়াসহ ১১টি কারণে এসব নারী দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
তাদের মধ্যে শারীরিক ও বি’কৃত যৌ’ন নির্যা’তনের কারণে ৩৮ জন, নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় ৪৮ জন, পর্যাপ্ত খাবার না দেওয়ায় ২৩ জন, ছুটি না দেওয়ায় ৪ জন, একাধিক বাড়িতে কাজ করানোয় ৭ জন, অন্য মালিকের কাছে বিক্রি করে দেওয়ায় ১ জন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১০ জন, পারিবারিক কারণে ১ জন,
ভিসার মেয়াদ না থাকায় ৮ জন, চুক্তি (২ বছর) শেষ হওয়ায় ১৬ জন এবং অন্যান্য কারণে ২ জন ফিরেছেন। এর মধ্যে কারও একাধিক কারণও রয়েছে। এসব নারী কর্মী ৩৯ জেলার অধিবাসী। এর মধ্যে ঢাকা জেলারই আছেন ১৭ জন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এসব নারী কর্মীর মধ্যে ২ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া ১৬ জন বাদে বাকিরা এক মাস থেকে ২ বছরের কম সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত আসেন। এর বড় একটি অংশ আসেন এক থেকে ৬ মাসের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংসদ ভবনে গতকালের বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থানে হয়রা’নি, প্র’তারণা ও ঝুঁ’কি এড়াতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি পর্যন্ত চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কর্মীরা যাতে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সঠিক সময়ে পান সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেন কমিটির সদস্যরা।
এ ছাড়াও তারা বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে লেবার উইংয়ের জনবল বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অ’বৈধ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিমানবন্দরে নারী কর্মীরা যাতে সঠিক সেবা পান সেদিকে লক্ষ রাখার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।