স্পোর্টস ডেস্ক:
আগামী ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের আসর। এবারের লিগে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
তবে সাকিব আল হাসান ও সাইফউদ্দিন খেলবেন না লিগে। কেননা ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) খেলতে গেছেন সাকিব। এ টুর্নামেন্ট খেলে ভারত সফরের আগে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ফিরবেন তিনি। অন্যদিকে ইনজুরির কারণে জাতীয় লিগে খেলতে পারছেন না সাইফউদ্দিন।
এ দুজন ছাড়া জাতীয় দলের অন্য ক্রিকেটাররা লিগে খেলবেন। নভেম্বরে ভারত সফরে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ সফরের জন্য জাতীয় লিগেই নিজেদের তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের।
এবারের আসরেও ফিটনেস পরীক্ষায় পাস করতে হবে ক্রিকেটারদের। গত আসর থেকেই ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে বিসিবি। তবে এবার ফিটনেস পরীক্ষার ব্যাপারে একটু কঠোর দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আগে ব্লিপ টেস্টে ৯ পেয়েই খেলার সুযোগ মিলত ক্রিকেটারদের। এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১১। ফিটনেস পরীক্ষায় ১১ স্কোর তোলা তরুণদের জন্য সহজ হলেও খুবই কষ্টকর হতে যাচ্ছে ৩৫ পেরিয়ে যাওয়া বয়স্ক ক্রিকেটারদের জন্য।
তবে ফিটনেসের চ্যালেঞ্জ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ৩৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, গত বছর আমি ১১.৪ পেয়েছিলাম। আমি যখন বাংলাদেশ টিমে শুরু করেছি, এখন পর্যন্ত আমার ফিটনেসে কোনো সমস্যা হয়নি। এবারও আশা করি যে বেঞ্চ মার্ক দেওয়া হয়েছে সেটি করার চেষ্টা করব।
তিনি আরও বলেন, সবার মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ফার্স্টক্লাস যারা খেলছি, সবাই যদি ফ্যাসিলিটিজটা পেত অফ সিজনে তা হলে ১১ দেওয়া কোনো ব্যাপারই নয়। গত বছর আমি ১১.৫ পেয়েছিলাম। ওই সুযোগ-সুবিধাটা কিন্তু আমরা পাই না। ন্যাশনাল টিম বা এইচপি, অনূর্ধ্ব-২৩ ওই টিমে যারা না থাকে, তাদের জন্য কিন্তু কঠিন হয়ে যায় একা একা অনুশীলন করাটা।
সুযোগ-সুবিধা বলতে প্র্যাকটিস করার জায়গাটা তো দরকার। ইনডোর বলেন, রেইনি সিজন থাকে বেশিরভাগ সময়। ওই সময় প্র্যাকটিস করার একটা জায়গা দরকার। এই জায়গা পাওয়া যায় খুব কম। যারা ন্যাশনাল টিম, এইচপি বা অনূর্ধ্ব-২৩ টিমের বাইরে থাকে, তাদের জন্য একটু কষ্টকর। তাও চেষ্টা করছি।
আশরাফুল মনে করেন, তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য ফিটনেস পরীক্ষায় উতরানো সহজ। তার মতে, বয়স ৩৫ হয়ে যাওয়ার পর ব্লিপ টেস্টে ১১ তোলা একটু কষ্টকরই। আমরা যেহেতু প্রফেশনাল ক্রিকেটার; বেতনভুক্ত ক্রিকেটার- যেটাই বলবে সেটাই করার চেষ্টা করব।
জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা তেমন কোনো সিস্টেমের মধ্যে থাকে না। লিগ শুরুর কদিন আগে একত্রিত হয় এবং ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন তারা। এ ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফিটনেস ধরে রাখা কতটা কঠিন?
এমন প্রশ্নের জবাবে শুভাগত হোম চৌধুরী জানান, অবশ্যই কঠিন, আমাদের মতো যারা এখন জাতীয় দলের বাইরে আছি, তাদের জন্য এটি একটু কঠিন। কারণ আমরা কোনো ক্যাম্প করতে পারছি না। শেষ মুহূর্তে জাতীয় লিগ শুরু হওয়ার আগে হয়তো ৫/৭ দিনের একটি ফিটনেস ট্রেনিং হয়। সেটি দিয়ে কতটা উন্নতি করা যাবে আমি জানি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই সময়ের মধ্যে যতটা উন্নতি করা যায়।
এদিকে এখনো কেমোথেরাপি (মস্তিষ্কের টিউমারের) চলছে মোশাররফ হোসেন রুবেলের। তিনি মাঠে ফেরার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্লিপ টেস্ট দিয়ে জাতীয় লিগে খেলার সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারটি কীভাবে দেখছেন?
রুবেল বলেন, আমি অবশ্যই বলব যে, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো আরও প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য এটি খুবই জরুরি ছিল। এবার যদি ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো শক্তিশালী না হয়, তা হলে একটা খেলোয়াড় তো কখনো আন্তর্জাতিক লেভেলে মানিয়ে নিতে পারবে না। এ কারণে ঘরোয়া পর্যায় থেকেই সে যদি পারফরম করে আসে, তা হলে সেই জায়গায় গিয়ে থিতু হতে পারে আর কি। এটার জন্য জরুরি ছিল।
আর আমাদের জন্য ১৫ দিন বা ১ মাসের জন্য কন্ডিশনিং ক্যাম্প হলে ভালো হতো। যদিও এখন সময় নেই। কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পর…। প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা ডিভিশন যদি এক মাস কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে এবং এর পর যদি এই পরীক্ষাগুলো দেয়, তা হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়। যেহেতু এখন সময় নেই, আশা করি আগামী বছর থেকে এটা হবে।