সময় এখন ডেস্ক:
দুর্নীতি না হলে দেশের চেহারাটাই পাল্টে যেতো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা কোথায় হারিয়ে গেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে নিউইর্য়কের হোটেল ম্যারিয়ট মারকুইসে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
অনুষ্ঠানে দুর্নীতিবাজদের বিরু’দ্ধে কড়া হুঁ’শিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা কথা স্পষ্ট বলতে চাই, এই অসৎ পথ ধরে কেউ উপার্জন করলে তার অনিয়ম, উশৃ’ঙ্খলতা বা অসৎ উপায় যদি ধরা পড়ে সে যেই হোক না কেন, আমার দলের হলেও ছাড় হবে না।
দুর্নীতির বিরু’দ্ধে ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরেকটা জিনিস আমি দেখতে বলে দিয়েছি- সেটা হলো কার আয়-উপার্জন কত? কীভাবে জীবনযাপন করে? সেগুলো আমাদের বের করতে হবে। এখন আমাকে খুঁজে বের করতে হবে এখানে কোথায় ফাঁকফোকর, কোথায় ঘাটতিটা, কারা কোথায়, কীভাবে এই জায়গাটা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
‘তাহলে আমরা সমাজ থেকে এই ব্যাধিটা, একটা অসম প্রতিযোগিতার হাত থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে পারব, আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারব,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সমাজের এই যে বৈ’ষম্য এটা দূর করার জন্য এরই মধ্যে আমরা দুর্নীতির বিরু’দ্ধে কঠোর ব্যবস্থা পদক্ষেপ নিয়েছি। মা’দকের বিরু’দ্ধে অভিযান সেটাও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মা’দক একটা পরিবার ধ্বং’স করে, একটা দেশ ধ্বং’স করে। এর সঙ্গে কারা আছে সেটাও আমরা খুঁজে বের করব।
বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রা’স, জ’ঙ্গিবাদ, মা’দক দূর করে বাংলাদেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে চান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমাদের দেশে শুধু না আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জ’ঙ্গিবাদ, সন্ত্রা’স এটা একটা সমস্যা। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি জ’ঙ্গিবাদ, সন্ত্রা’স, মা’দক এবং দুর্নীতির বিরু’দ্ধে।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক দলীয় সভায় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে চাঁদাবাজির অভিযোগে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর ঢাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তত্ত্বাবধানে ক্যাসিনো চালানোর খবর সংবাদমাধ্যমে এলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে ও বারে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব অভিযানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে, বিদেশযাত্রায়ও নিষে’ধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
প্রবাসীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান বলেন, যারা সৎভাবে জীবন যাপন করতে চায়, তাদের জন্য বা তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য এই সৎভাবে জীবন যাপনটা কঠিন হয়ে যায়, যখন অসৎ উপায়ে উপার্জিত পয়সায় সমাজকে বিক’লাঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, একজন সৎভাবে চলতে গেলে তাকে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে চলতে হয়, আর অসৎ উপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এই ব্র্যান্ড, ওই ব্র্যান্ড, এটা সেটা হৈ চৈ… খুব দেখাতে পারে। ফলাফলটা এই দাঁড়ায় একজন অসৎ মানুষের দৌ’রাত্মে যারা সৎভাবে জীবনযাপন করতে চায় তাদের জীবনযাত্রাটাই কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলেমেয়েরা ছোট শিশু, তারাতো আর এতটা বোঝে না। ভাবে যে, ওরা এই ভাবে পারে তো আমাদের নাই কেন? এটা স্বাভাবিক, তাদের মনে এই প্রশ্নটা জাগবে। ওরা ছোট ছোট বাচ্চারা, তারা সৎ-অসৎতের কী বুঝবে?
তিনি আরও বলেন, তারা (শিশুরা) ভাবে, আমার বন্ধুদের এত আছে, আমাদের নাই কেন? স্বাভাবিকভাবে মানুষকে অসৎ উপায়ের পথে ঠেলে দেবে।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৭৩তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্লোগান দেয়।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। শুক্রবার তিনি জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশনে ভাষণ দেন। আজ রোববার রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
161.8K
১ Comment
আপনার পিতার ন্যায় ক্ষমতা মূখী রাজনীতি নয় বরং রাজনীতি মূখী ক্ষমতার আদর্শে বলীয়ান হলে অবশ্যই আপনি পারবেন।