সময় এখন ডেস্ক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে এক চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রীর কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার দর-কষাকষির একটি ফোনালাপ ফাঁ’স হয়েছে। ফোনালাপটি এখানে তুলে ধরা হলো:
উপ-উপাচার্য: হ্যাঁ, সাদিয়া। আমি প্রফেসর জাকারিয়া (চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার), প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: আসসালামু আলাইকুম স্যার।
উপ-উপাচার্য: ওয়ালাইকুমুস সালাম। আচ্ছা মা, একটা কথা বলতো, তোমরা কয় টাকা দেওয়ার জন্য রেডি।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: স্যার, সত্যি কথা বলতে…
উপ-উপাচার্য: না না, সত্যি কথাই তো বলবা। উপরে আল্লাহ তায়ালা, নিচে আমি।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: অবশ্যই, অবশ্যই। স্যার, আপনি যেহেতু তার অবস্থা জানেন, আরেকটা বিষয় এখানে স্যার, সেটা হচ্ছে, আপনি হুদার… মানে, এমনিতে সে কতটা স্ট্রিক…, আপনি বোধহয় এটাও জানেন স্যার, একটু রগচটা ছেলে।
উপ-উপাচার্য: আচ্ছা রাখো রাখো, এখান থেকে কথা বলা যাবে না।
দর-কষাকষির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, কী জানি, কোন মেয়ে কখন আসছে।
ওই নারীর সঙ্গে দর-কষাকষির বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য বলেন, আমি মেয়েদের সঙ্গে কথা তো কমই বলি, টেলিফোনে আমি বলি যে, তোমার সঙ্গে দেখা করারও দরকার নেই, কথা বলারও দরকার নেই।
প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদ পেয়েও নিয়োগ পাননি ওই চাকরিপ্রত্যাশী
জানা যায়, ওই চাকরিপ্রত্যাশীর নাম মোহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে অনার্সে ৩.৬৫ ও মাস্টার্সে ৩.৬০ পান। আইন অনুষদে সেরা হওয়ায় ২০১৭ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান। তার বাড়ি চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার নিজ এলাকা লালমনিরহাটে। তবে ওই বিভাগে ৩ জন প্রভাষক হলেও নিয়োগ পাননি মোহাম্মদ নুরুল হুদা।
নিয়োগ পেয়েছেন যারা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ৩টি প্রভাষক পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। গত বছরের ১৩ নভেম্বর ওই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আর ১৭ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগ অনুমোদিত হয়। এর পরদিন ১৮ নভেম্বর নিয়োগপ্রাপ্তরা বিভাগে যোগদান করেন।
ওই নিয়োগে প্রভাষক পদে বিভাগে যোগদান করেছেন ফোনালাপ ফাঁ’সকৃত উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার মেয়ের জামাই সাইমুন তুহিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর মেয়ে নূর নূসরাত সুলতানা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী বনশ্রী রানী।
আমাদের সময় অনলাইন এর সৌজন্যে:
42