রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দিতে রাজি মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

0

সময় এখন ডেস্ক:

নাগরিক হিসেবে শনাক্তের পর রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দিতে মিয়ানমার রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নিউইয়র্কে চীনের উদ্যোগে আয়োজিত ৩ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ বিষয়ে মিয়ানমার সম্মতি দেয় বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় অর্জন বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল লেক ক্যাসলে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) উদ্যোগে ‘সহিং’সতা ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে যুব সমাজের ভূমিকা : উত্তরবঙ্গ থেকে অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানান ড. মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নাগরিকত্ব শনাক্তকরণে রোহিঙ্গাদের যে আবেদনপত্র পূরণ করতে দেয়া হয়েছিল তাতে ভুল থাকার কথা স্বীকার করেছে মিয়ানমার। শনাক্ত হওয়া নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটি।

তিনি বলেন, তারা (রোহিঙ্গাদের) নতুন নতুন ফরম দিতে এবং নাগরিকত্ব শনাক্ত হওয়ার পর সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে রাজি হয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর চীনের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এগিয়ে নেয়ার এ আনুষ্ঠানিক বৈঠকে চীনকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘ত্রিপক্ষীয় যৌথ কার্যনির্বাহী’ ফোরাম গঠনে মিয়ানমার সম্মতি দেয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা স’ঙ্কট যে মিয়ানমারের তৈরি এবং এর সমাধান তাদেরই করতে হবে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রায় সব দেশ এ বিষয়ে মত দিয়েছে। সেখানে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে প্রাচীর নির্মাণে আপত্তি এনজিওগুলোর

দেশব্যাপী রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া এবং নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া ও গার্ড টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

এক বিবৃতিতে সংস্থাটি উল্লেখ করে, রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের হলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার ও মানবিক প্রয়োজন অ’স্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী চলাফেরার স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা ও প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে অ’সামঞ্জস্যপূর্ণ।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, এসব শিবির ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া ও গার্ড টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশে এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, মিয়ানমারে সহিং’সতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি শিবিরগুলোকে কার্যত উন্মুক্ত কারাগার বানাতে চাইছেন। শরণার্থীদের বাইরের বিশ্ব থেকে আলাদা করে বাংলাদেশ সরকার তাদের অর্জিত বৈশ্বিক সুনামকে ঝুঁ’কিতে ফেলে দিচ্ছে।

সংস্থাটির দাবি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তার সুরক্ষা দেয়ার পরিবর্তে তাদের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে চলাফেরার স্বাধীনতাকে অ’স্বীকার করা হচ্ছে। এছাড়া এর ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে শিবির থেকে বাইরে বের হওয়া বা জরুরি চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য মানবিকসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে তারা।

শেয়ার করুন !
  • 582
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!