পরামর্শ: ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খান? আপনার জানা দরকার

0

স্বাস্থ্য বার্তা ডেস্ক:

প্রথমবার কোনো সমস্যায় ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিল। তখন কমেছিল রোগ। আবারও একই সমস্যা দেখা গেলে যে ওই একই অ্যান্টিবায়োটিক নিজের মতো করে খেয়ে নেবেন, তা কিন্তু নয়। এতে বড় বিপদ হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলছে, এভাবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্র’বণতাই ঠেলে দিচ্ছে রোগের দিকে। বিজ্ঞানীরাও গবেষণার পর শি’উরে উঠেছেন। সচেতনতার ডাক ইতোমধ্যেই দিয়েছেন অনেক চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সংগঠন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কিশোর কুমারের মতে, অকারণ ও অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে মেদ তো বাড়ছেই, তার সঙ্গে শরীরে সুপারবাগসের উপস্থিতি সমস্যায় ফেলছে রোগী ও চিকিৎসককে। যখন-তখন ইচ্ছামতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে নিতে শরীরে তৈরি হচ্ছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’ (এএমআর)। এটাই ডেকে আনছে আগামী দিনের গুরু’তর বিপদ।

সুপারবাগস কী?

ঘন ঘন কোনও অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে শরীর নিজের মধ্যেই সেই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরু’দ্ধে এক প্র’তিরোধ তৈরি করে। ফলে দিনের পর দিন সেই ও’ষুধ নেয়ার ফলে একটা সময়ের পর তা আর শরীরে কাজ করে না। কারণ শরীরে উপস্থিত ব্যাক্টেরিয়া ও’ষুধের সঙ্গে ফাইট করার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে তত দিনে, হয়ে উঠেছে আরও শক্তিশালী। অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন সেই জীবাণুদেরই চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘সুপারবাগস’।

চিকিৎসকদের আশ’ঙ্কা, সতর্ক না হলে এমন একটা সময় আসবে যখন অধিকাংশ সুপারবাগের সঙ্গে ফাইটিংয়ের মতো কোনও ও’ষুধই পাওয়া যাবে না। ফলে বহু রোগের চিকিৎসা মিলবে না।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শর্মিলী বড়ুয়ার মতে, এমন অবস্থা যে সাধারণ ভাইরাল ফিভারও সারছে না সহজে। কিছু অসুখের চিকিৎসা করতে গেলে ড্রা’গ রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা করতে হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে বাতিল অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

অ্যান্টিবায়োটিক ও ফ্যাট

ফ্যাট, খিদে এসব সামলায় ঘ্রেনিল নামের হরমোন। শরীরের ভালো কিছু জীবাণুর উপস্থিতিতে এর কাজকর্মের গতি বাড়ে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের ঘন ঘন ব্যবহার এই ভালো জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলে। ফলে ওজন বাড়ে। এদের মৃ’ত্যুতে পাকস্থলীতে ইস্ট সংক্র’মণ বেড়ে শরীরে পানি যেমন জমে, তেমনই থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যও ন’ষ্ট করে।

কাজেই বিজ্ঞানীদের পরামর্শ হলো, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে ভালো খাওয়া–দাওয়া করে, পরিমিত ব্যায়াম করে ও নিয়ম মেনে রোগ প্র’তিরোধ ক্ষমতা বাড়ান। তাতে রোগ যেমন কম হবে, নিয়ন্ত্রণে থাকবে ওজনও।

তাহলে উপায়

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই চলবে না। প্রাকৃতিক উপায়ে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি নজর দিয়ে রোগ প্র’তিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। খাওয়ার অ’নিয়ম হলে অপুষ্টি ঠেকাতে ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ নিন। শরীরচর্চায় মন দিন। ক্যালরি ঝরাতে ও রোগ ঠেকাতে এর কোনো তুলনা নেই।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!