মসজিদের মেঝেতে মক্তবে পড়ুয়া শিশুকে ধ’র্ষণ, শিক্ষক লাপাত্তা

0

জামালপুর প্রতিনিধি:

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের মক্তবের একজন শিক্ষক কর্তৃক প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৫ বছরের এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে ধ’র্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার সকালে এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক মনিরুল ইসলাম (৪০) গা ঢাকা দিয়েছেন। উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙার গ্রাম জামে মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিশু ও গণশিক্ষা কর্মসূচি পরিচালিত মক্তবে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক মনিরুল ইসলাম উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙার গ্রামের মো. শুক্কুর আলীর ছেলে। তিনি বিবাহিত। অপরদিকে ভিক্টিম শিশুটি একই ইউনিয়নের ভাটির গ্রাম এলাকার দরিদ্র এক গার্মেন্টসকর্মী দম্পতির মেয়ে। ওই দম্পতি ঢাকায় থাকেন। পরিবারের অন্যান্য স্বজনরা শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় বুধবার দিবাগত রাতে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙার গ্রাম জামে মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত শিশু ও গণশিক্ষা কর্মসূচির মক্তবে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে স্থানীয় অন্ততঃ ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মসজিদের ভেতরে মেঝেতে বসে পাঠদান চলে।

বুধবার ১০/১২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। শিক্ষক মনিরুল ইসলাম কিছুক্ষণ পড়িয়ে অন্য শিশুদের মসজিদের সামনের গাছ থেকে কামরাঙ্গা খাওয়ার কথা বলে বাইরে পাঠায়। সহপাঠীরা বাইরে গেলে শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ৫ বছর বয়সের এক মেয়ে শিশুকে মসজিদের ভেতরে মেঝেতে ফেলে ধ’র্ষণ করে। এ সময় শিশুটির র’ক্তপাত শুরু হয় এবং কাঁদতে শুরু করলে মনিরুল সবাইকে ছুটি দিয়ে দ্রুত মসজিদ থেকে কেটে পড়েন। ঘটনার পর থেকেই ওই শিক্ষক গ্রাম ছেড়েছে।

এদিকে শিশুটি র’ক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে গেলে তার স্বজনরা বুঝতে পারেন কী ঘটেছে। স্বজনরা তাকে নিয়ে দেওয়ানগঞ্জ থানায় গেলে আগে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে স্বজনরা বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শিশুটিকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। শিশুটি বর্তমানে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ১ নম্বর বিছানায় চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, অবুঝ এই শিশুটি হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। তার স্বজনরা বললেন, আজও শিশুটির র’ক্তপাত হয়েছে।

জামালপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. ফেরদৌস হাসান জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার কোনো আবেদন করা হয়নি। পুলিশের আবেদন পেলেই শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। তবে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিছু আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জামালপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভাঙার গ্রাম মক্তবের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম কর্তৃক প্রাক-প্রাথমিকের এক শিক্ষার্থীকে ধ’র্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আইনাননুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেওয়ানগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিবুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার বলেন, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে মসজিদে মক্তবের শিক্ষার্থীকে ধ’র্ষণের ঘটনাটি বুধবার রাতে শুনেছি। শিক্ষকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাকে আটক করার চেষ্টা চলছে। একই সাথে শিশুটির স্বজনদেরকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলেই মামলা দায়ের করা হবে এবং শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!