সময় এখন ডেস্ক:
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ও সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে বিদ্বে’ষপূর্ণ স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহি’ষ্কার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ী বহি’ষ্কার করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে বুধবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তার বিরু’দ্ধে অভিযোগ- শৃঙ্খলা ভ’ঙ্গ, সরকার প্রধান, দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রবিরো’ধী বক্তব্য ফেসবুকে দেওয়ায় এবং তা স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় ডা. শেখ বাহারুল আলমের বিরু’দ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডা. শেখ বাহারুল আলম খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছাড়াও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলা শাখার সভাপতি।
গত ৬ অক্টোবর বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ভারতের সঙ্গে কী চুক্তি হয়েছে তা জানার অধিকার এদেশের জনগণের রয়েছে’ ডা. শেখ বাহারুল আলম। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু নিচে দেওয়া হলো:
“ভারত – বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বলা হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত– বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ও অধিকার চরম উ’পেক্ষিত…
দু’র্বল অবস্থানে থেকে বন্ধু-প্রতিম শক্তি’ধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে -ফলাফল শক্তি’ধরের পক্ষেই আসে। বাংলাদেশ- ভারত উভয়পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নাম দেওয়া হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয় দু’র্বল রাষ্ট্রকে। ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সকল স্বার্থই আদায় করে নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে এখনও ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি।
১) দীর্ঘদিনের আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় স্থান পায়নি।
২) ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ হুং’কার দিয়েছে নাগরিক পঞ্জীতে বাদ পড়া জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হবে। তারপরেও এবারের সমঝোতা চুক্তিতে ‘অভ্যন্তরীণ’ অ’জুহাতে বিষয়টি স্থান পায়নি।
৩) বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্র’ত্যাবসনের বিষয়ে ভারত কিছু বলেনি।
৪) তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ অংশের ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরা রাজ্যের পানীয় জল হিসেবে প্রতিদিন ১.৮২ কিউসেক টেনে নেবে ভারত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
৫) বাংলাদেশের জনগণের তরল গ্যাসের চাহিদা পূরণের ঘাটতি থাকলেও ভারতে তরল গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং যৌথভাবে সে প্রকল্প উদ্বোধনও হয়েছে।
৬) চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনও বন্দর সেই তালিকায় ছিল না।
অ’মানবিক আচরণের শি’কার হয়েও বাংলাদেশ পানি ও গ্যাস সরবরাহ দিয়ে মানবিকতার প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উ’পেক্ষিত রেখে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে।
শক্তি’ধর প্রতিবেশীর আধিপ’ত্যের চাপ এতোই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশং’কা হয়। কারণ ভারতের চাপিয়ে দেওয়া সকল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হচ্ছে।
129