ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
১৯৭৬ সালের কথা। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া ৫ দিন বয়সী এক শিশু কন্যাকে এতিম’খানায় নিয়ে যাচ্ছিল গ্রামের কিছু লোক।
সে সময় শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা এক কানাডিয়ান দম্পতি যাচ্ছিলেন সেই পথ ধরে। শিশুটিকে ওই অবস্থায় দেখে তাকে দ’ত্তক নেন তারা। শিশুটি চলে যায় কানাডায়। পরে স্থায়ীভাবে জার্মানিতে বসবাস করেন সেই দম্পতি।
এরপর চলে গেছে ৪৩ বছর। সেই শিশুটি এখন স্যালিনা ম্যাকডোনাল্ড। ১ ছেলে আর ১ মেয়ের জননী। পালক বাবার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে স্যালিনা বাংলাদেশে এসেছেন শিকড়ের সন্ধানে।
বুধবার রাতে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে এসে এমন তথ্য জানান স্যালিনা। তিনি বলেন, গত ৪ অক্টোবর গিয়েছিলাম জামালপুরের সরিষাবাড়ী। গিয়েছিলাম গাইতাপাড়া গ্রামেও। কিন্তু বাবা-মার দেখা আর পাইনি।
স্যালিনা জানান, কিছুটা বড় হওয়ার পরই পালক বাবা তাকে জানান, তার বাড়ি বাংলাদেশে। বাংলাদেশের জামালপুরের সরিষাবাড়ী। এদিকে স্যালিনা বড় হন। তার এখন ২২ ও ১৫ বছর বয়সী দুই ছেলেমেয়ে আছে।
বেশ কিছু দিন আগে স্যালিনা গুগল সার্চ দিয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ী বের করেন। এরপর তার জার্মান বন্ধু মার্ক শিয়েরারকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন ২ সপ্তাহ আগে।
বাংলাদেশে এসে পরিচয় হয় ময়মনসিংহের দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। দেলোয়ার হোসেনই তাদের সরিষাবাড়ী নিয়ে যান। তবে সেখানে গাইতাপাড়া গ্রাম খুঁজে পেলেও নিজের বাবা-মার সন্ধান আর পাননি স্যালিনা।
তিনি বলেন, আরও ২ সপ্তাহ বাংলাদেশে থাকব, খুঁজব বাবা-মাকে। আর বাংলাদেশ আমার খুব ভালো লেগেছে। এখানকার মানুষজন অনেক আন্তরিক।
এদিকে মা বাবার সন্ধান করতে জার্মানি থেকে এক তরুণী এসেছেন শোনার পর অনেকেই তাদের হারানো সন্তান দাবী করে দেলোয়ার হোসেনের সাথে দেখা করছেন। যদিও তাদের কেউই স্যালিনার আসল বাবা মা নন বলে যাচাই করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে।
দেলোয়ার জানান, কিছু মানুষ হু’জুগে মেতে এ কাজ করছে। তবে কিছু দম্পতি এসেছেন, যাদের সন্তান হারিয়ে গিয়েছিল সে সময়।
126