সময় এখন ডেস্ক:
চলতি বছরের ডিসেম্বরেই বহুল প্রত্যাশিত ই-পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। জানুয়ারি মাস থেকে এটি দেয়া শুরু হবে। প্রথমে পাবেন ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা, এরপর রাজধানীবাসী এবং পরে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এটি চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিটির সভাপতি কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ ও মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান সংসদীয় কমিটিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
পাসপোর্ট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করবেন। জানুয়ারি থেকেই পাসপোর্ট দেয়া শুরু হবে। এই প্রসেস শেষ করতে ৫ থেকে ৬ বছর লাগবে। জার্মানির কোম্পানির সঙ্গে এ জন্য একটি চুক্তি হয়েছে। যতদিন না এই পাসপোর্ট শেষ হবে ততদিন এমআরপি পাসপোর্ট চালু থাকবে।
ই-পাসপোর্ট একবারে ১০ বছরের জন্য দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রধান কার্যালয়সহ ঢাকার ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। এরপর সারা দেশে ও পরে বিদেশ থেকেও ই-পাসপোর্ট দেয়া হবে।
প্রবাসীদের পাসপোর্ট ইস্যু দেরি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫ দিনের মধ্যেই তাদের পাসপোর্ট দেয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। ১৫ দিনের বেশি দেরি হলে কেন দেরি হচ্ছে এটা প্রবাসীদের জানানোর জন্য একটি অ্যাপ চালুর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের জন্য আমরা একটি অ্যাপ চালুর পরামর্শ দিয়েছি। এখানে পাসপোর্টের সর্বশেষ স্ট্যাটাস থাকবে। কোনো পাসপোর্ট প্রদানে কেন দেরি হচ্ছে কতটা সময় লাগবে তা সেখানে উল্লেখ থাকবে।
এদিকে পাসপোর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, পাসপোর্ট ইস্যুতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টিও এসেছিল। এ বিষয়ে আমি বলেছি, জাতীয় পরিচয়পত্রে কোনো ব্যক্তির নাম-ঠিকানাসহ সব ধরনের তথ্যই থাকে। তাহলে এখন পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা কী?
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দেন। এরপর প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিআইপি) তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর। বর্তমান এমআরপি ব্যবস্থা থেকে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় উত্ত’রণ ঘটলে বাংলাদেশিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খুব সহজে ভ্রমণ করতে পারবেন।
কারণ ই-পাসপোর্ট এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিদ্যমান বইয়ের সঙ্গে একটি ডিজিটাল পাতা (ডাটা পেজ) জুড়ে দেয়া হবে। ওই ডিজিটাল পাতায় উন্নতমানের মেশিন রিডেবল চিপ বসানো থাকবে। এতে সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য।
ডাটা পেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর ৩ ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশও। ভ্রমণকালে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কম্পিউটারের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবেন। সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ই-গেট ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করা যাবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, নাহিম রাজ্জাক এবং কাজী নাবিল আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।