সময় এখন ডেস্ক:
রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে ফায়ারিংয়ের ঘটনায় ১ বিএসএফ সদস্য নিহ’ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে অ’বৈধভাবে পদ্মা নদীতে ভারতীয় জেলেদের ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিজিবি। একইসঙ্গে বিএসএফের বাংলাদেশে প্রবেশের একটি ছবিও প্রকাশ করেছে।
বিএসএফের ছবিটি দিয়ে বিজিবি বলেছে, ওই স্পিডবোট দিয়ে রাজশাহীর চারঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাইন থেকে প্রায় ৬৫০ গজ বাংলাদেশের ভিতরে চলে আসেন বিএসএফ সদস্যরা। ওই ছবির ডানে (চেক শার্ট পরা) বাংলাদেশি মৎস্য কর্মকর্তাকে দেখা যাচ্ছে।
বিজিবির বিবৃতিতে বলা হয়, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চারঘাট বিওপি থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এবং সীমান্ত পিলার ৭৫/৩-এস থেকে ৫০০ মিটার বাংলাদেশের ভেতরে চারঘাট থানার শাহরিয়ার খাল এলাকায় মাছ ধরছিলেন ৩ ভারতীয় জেলে। ওই সময় সেখানে মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পদ্মা নদীতে অভিযান চলছিল।
ওই সময় ৩ জেলেকে আটক করার চেষ্টা করলেও ২ জন পালিয়ে যান। ১ জনকে জালসহ আটক করার পর বিজিবি কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন যে ওই জেলেরা ভারতীয় নাগিরক।
এর কিছুক্ষণ পর ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারি ক্যাম্প থেকে ৪ সদস্যের একটি টহল দল স্পিডবোট নিয়ে ‘অনুমতি ছাড়া’ শূন্য রেখা অতিক্রম করে ‘অ’বৈধভাবে’ বাংলাদেশের ভেতরে ৬০০-৬৫০ গজ প্রবেশ করে। নদীর এ পাড়ে বিজিবি টহল দলের কাছে এসে তারা আটক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দিতে বলেন।
তখন বিজিবি টহল দল আটক ভারতীয় নাগরিককে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে হ্যান্ডওভার করা হবে বলে জানান। কিন্তু তারা ভারতীয় নাগরিককে বিজিবির কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে তাদের উপর ৬/৮ রাউন্ড ফায়ার করে বিএসএফ।
আত্ম’রক্ষার জন্য বিজিবি টহল দল পাল্টা ফাঁকা ফায়ার করলে বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত চলে যায়।’
আটক ভারতীয় নাগরিক প্রণব মণ্ডল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার ছিড়াচর গ্রামের বসন্ত মণ্ডলের ছেলে বলে জানিয়েছে বিজিবি। তাকে চারঘাট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে বিজিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তার কাছ থেকে ৪ কেজি ওজনের কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও বিজিবির বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, আটক ভারতীয়র কাছ থেকে উদ্ধার করা জাল ইলিশ ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। ঘটনার সময় তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের আরিফুল বলেন, ইলিশের প্রজ’নন মৌসুমে মাছ ধরায় নিষে’ধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা যেন নদীতে ইলিশ ধরতে না পারে সেজন্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে সকালে নদীতে অভিযানে যান তিনি।
‘আমরা দেখতে পাই, পদ্মা-বড়ালের মোহনায় বাংলাদেশের সীমানার ভেতর একটি নৌকায় করে ৩ জন জেলে ইলিশ ধরছে। তাদের আটকের চেষ্টা করা হলে ২ জন পালিয়ে যায়। ১ জনকে আটক করা সম্ভব হয়।
খবর পেয়ে বিএসএফ সদস্যরা এসেই ফায়ার শুরু করে। জবাবে বিজিবিও তখন ফায়ার করে। উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড ফায়ারিং হয়। এক পর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটে।’
পরে পতাকা বৈঠকে উভয়পক্ষ নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি মতানৈক্যের বিষয়গুলোতে তদন্ত করতে সম্মত হয়েছে বলে বিজিবি কর্মকর্তা ফেরদৌস জানান।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য ‘শিগিরই’ আবারও পতাকা বৈঠক করার বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন।
231