বক্তব্যের মাঝখানেই হাব সভাপতিকে ধর্ম সচিবের ‘ধমক’

0

সময় এখন ডেস্ক:

সরকারি হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের বক্তব্যের মাঝখানে থামিয়ে দিয়েছেন ধর্মসচিব আনিছুর রহমান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত হজ ব্যবস্থাপনা কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাব সভাপতি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে পান থেকে চুন খসলেই সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে শা’স্তির মুখোমুখি হতে হয়। এমনকি মক্কা-মদিনায় হাজীদের আবাসিক হোটেলের বিদ্যুৎ গেলেও এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। অথচ সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজীদের হয়রা’নি বা অ’নিয়ম হলে তাদের কোনো অভিযোগ করারই সুযোগ নেই।

সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজীরা কোনো অভিযোগ দিতে চাইলে তা গ্রহণ করে না ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এটা হতে পারে না। আইন সবার জন্য সমান হতে হবে বলে দাবি করেন হাব সভাপতি এম শাহাদত হোসাইন তসলিম।

পরিচালক (হজ) সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় ধর্ম সচিব মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদীয় কমিটির সদস্য বেগম রত্না আহমেদ। সদ্য সমাপ্ত চলতি বছরের (২০১৯) হজ কার্যক্রমের সামগ্রিক তথ্য তুলে ধরেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) এ বি এম আমিন উল্যাহ নূরী।

হাব সভাপতি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যান হজ পালন করতে। এরমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজারই যান বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।

তাদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অ’সুবিধা হলে বা অ-ব্যবস্থাপনা হলে সৌদি আরবে হজ মিশনগুলোতে অভিযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। পান থেকে চুন খসলেই সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ বড় ধরণের জরি’মানা করা হয়।

অথচ সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের থাকা-খাওয়াসহ নানা ধরনের অ-ব্যবস্থাপনা হলে তার কোনো প্র’তিকারের ব্যবস্থা নেই। এমনকি অভিযোগ করারও কোনো সুযোগ দেয়া হয় না। এটা কেন হবে?

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এম শাহাদত হোসাইন তসলিম বলেন, একজন হাজী হজ মিশনে অভিযোগ দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অভিযোগ লিখে কোন এজেন্সির মাধ্যমে হজে এসেছেন জানতে চান অভিযোগকারীর কাছে। অভিযোগকারী ব্যক্তি সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজী জানালে তার অভিযোগ গ্রহণ করতে অ’স্বীকৃতি জানান ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, শুধু বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে আসা হাজীদের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়। অথচ হাজীদের আবাসিক হোটেলে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনায়ও লাইসেন্স বাতিলের নজির রয়েছে। এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান হাব সভাপতিকে ‘ধমক’ দিলে তিনি অবশিষ্ট বক্তব্যে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তসলিম বলেন, ফিরতি ফ্লাইটের টিকিট নিয়ে বড় ধরনের অ’নিয়ম হচ্ছে। বেশি টাকা নিয়েও ফিরতি ফ্লাইটের টিকিট খালি রাখা হচ্ছে। কিন্তু ফিরতি ফ্লাইটের টিকিট খালি কেন আমি জানতে চাই। এ ফ্লাইট তো করেসপন্ডিং ফ্লাইট। অতিরিক্তি টাকা নিয়ে ফিরতি টিকিট খালি রেখে হজযাত্রীদের ক’ষ্টে ফেলা হচ্ছে। সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনা করতে হলে এটা বন্ধ করতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, হজযাত্রীদের সেবা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা সমান চোখে দেখা হচ্ছে না। অ’ন্যায় করলে এজেন্সিগুলোর শা’স্তি হোক, কিন্তু সামান্য ভুলের জন্য অনেক সময় তাদের বড় শা’স্তি দেয়া হচ্ছে। অথচ সরকারি হজযাত্রীরা দুঃখ ক’ষ্ট পেলেও তারা অভিযোগ দিতে পারেন না। এজন্য দায়ীদের শা’স্তিও হয় না।

পরে অবশ্য ধর্মসচিব তার বক্তব্যে নিজের ওই ধমকের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আমি এ ধরণের অভিযোগগুলো কর্মশালার প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচনার সুযোগ দেয়া হবে বলেই হাব সভাপতিকে বলার চেষ্টা করেছি। যদিও কর্মশালার পরবর্তী সেশনে এ ধরণের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!