বিশ্ব বিচিত্রা ডেস্ক:
একদিকে ধ্বং’স, অন্যদিকে নতুন প্রজাতির খোঁজ। আমাজনের পরতে পরতে এখনও রহস্যে মোড়া জীব বৈচিত্র। আমাজনে নানা রকম প্রজাতির মাছের খোঁজ আগেও মিলেছিল। অজানা কয়েকটি প্রজাতিকে নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, দুটি নতুন প্রজাতির ইলেকট্রিক ইলের সন্ধান মিলেছে আমাজনে যাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন করার ক্ষমতা আরও মা’রাত্মক। সোজা কথায় বলতে গেলে, এই ভ’য়ঙ্কর ইলের একটু স্পর্শ লাগলেই মৃ’ত্যু নিশ্চিত।
প্রায় মাসখানেক হয়ে গেল, একের পর এক দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে আমাজন অরণ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে গাছপালা, পশুপাখি, পতঙ্গ থেকে হাজার হাজার প্রজাতির মাছ। যে অরণ্যকে বলা হয় ‘পৃথিবীর ফুসফুস’, তার এই পরিণতিতে রীতিমতো আত’ঙ্কিত পরিবেশবিদেরা।
প্রাণিবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই দাবানলের মধ্যেও নতুন প্রজাতির ইলেরা এখনও বেঁচে রয়েছে সেটাই আশ্চর্যের। যদি এই প্রজাতি বেঁচে থাকার পরীক্ষায় উৎরে যায়, তাহলে প্রাণিবিজ্ঞানের গবেষণায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে।
স্মিথসোনিয়াম ন্যাশনাল মিউজিয়ামের প্রাণিবিদ সি ডেভিড দে সান্টানা জানিয়েছেন, গত ৫০ বছর ধরে এই প্রজাতিরা আমাজন অববাহিকায় বাসা বেঁধেছে। ইলেকট্রোফোরাস ভোল্টাই জাতের ইলেরা সাধারণত ৬-৭ ফুট লম্বা হয়, ওজনে হয় ১৫-২০ কিলোগ্রাম। নতুন এই নতুন সন্ধান পাওয়া ২ প্রজাতি লম্বায় আরও কিছুটা বেশি, ওজনেও ভারী। তবে মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায়।
এক একটি সাধারণ প্রজাতির ইল মাছ ৫০০-৮০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে। এই বিদ্যুৎ প্রবাহর পরিমাণ প্রায় ১ অ্যাম্পিয়ার এবং বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে ১-২ মিলি সেকেন্ড পর্যন্ত। শি’কার ধরার সময় বা শ’ত্রুপক্ষের আগমণ টের পেলে, আত্ম’রক্ষার জন্য এই বিদ্যুৎ তারা ব্যবহার করে।
বি’পদ বুঝলেই মস্তিষ্ক বার্তা পাঠায় স্নায়ুমণ্ডলে। খুলে যায় আয়ন চ্যানেল। সোডিয়ামের প্রবাহে বিদ্যুৎ তৈরি হয় অনেকটা ব্যাটারির মতো। সেই বিদ্যুতের শক দিয়েই শ’ত্রুকে কাবু করে ফেলে ইলেরা। ঘোড়ার মত বিপুল প্রাণশক্তিসম্পন্ন প্রাণীর হৃদস্পন্দন থেমে গিয়ে কাবু হয়ে যায় মাত্র কয়েক সেকেন্ডে।
প্রাণিবিদরা জানিয়েছেন, নতুন প্রজাতির এই ইল আরও বেশি ক্ষিপ্র। এদের বিদ্যুৎ তৈরির ক্ষমতা আরও অনেক বেশি। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে এক একবারে এরা ৬৫০-৮৬০ ভোল্ট বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে।
প্রাণিবিদ সি ডেভিড দে সান্টানা বলেছেন, ইলেকট্রোফোরাস ভোল্টাই ছাড়াও, ইলেকট্রোফোরাস ইলেকট্রিকাস ও ইলেকট্রোফোরাস ভারি এই ২ প্রজাতিও ঘাঁটি গেড়েছে আমাজন অববাহিকায়।
বিজ্ঞানীর মতে, ইলেরা বিদ্যুৎ তৈরির জন্য ৩ রকমের ইলেকট্রিক অর্গ্যান ব্যবহার করে। তবে একেক প্রজাতির বিদ্যুৎ তৈরির ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য একেক রকম হতেই পারে। এই ৩ প্রজাতির ডিএনএ পরীক্ষা করে তারই খোঁজ চলছে।
সূত্র: দ্য ওয়াল।
113