কলকাতা প্রতিনিধি:
এক সময় তিনি ছিলেন সরকারি অফিসের এক সামান্য বেতনে চাকুরি করা কেরানী। কিন্তু সেসবে আর পোষাচ্ছিল না। ভাবলেন পেশা পরিবর্তন দরকার। এমন পেশা বেছে নিতে হবে, যে পেশা নিরাপদ, বসে বসে কামাই করা যায় কোটি কোটি টাকা।
যে ভাবনা, সে-ই কাজ, নিজেকে কৃষ্ণের দশম অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে নেমে গেলেন ধর্ম ব্যবসায়।
আয়কর ফাঁ’কি দেয়ার অভিযোগে ভারতের সেই ‘কল্কি বাবা’র আশ্রমে এবার রেইড দিলেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তরা। উদ্ধার হয়েছে হিসাব ছাড়া নগদ ৯৩ কোটি টাকা। সঙ্গে সোনা, হীরা মিলিয়ে আরও ৪০৯ কোটি টাকার সম্পত্তি।
বিজয় কুমার নামে ওই গুরু নিজেকে কলি যুগের কৃষ্ণ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকরি ছেড়ে চিত্তুরে একটি স্কুল খোলেন।
নাম দেন ‘জিবাশ্রম’। তার শিষ্যদের আধ্যাত্মিক পাঠ দিতেন তিনি। ক্রমে তার শিষ্যের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চিত্তুরে তিনি ‘ওয়াননেস’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলে ফেলেন। প্রচুর সেলিব্রিটি এবং বড় ব্যবসায়ীও তার শিষ্য হয়ে যান।
নব্বইয়ে দশকে তিনি নিজেকে কৃষ্ণের দশম অবতার ‘কল্কি’ হিসাবে ঘোষণা করেন। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকে তার প্রচুর আশ্রম রয়েছে।
এ ছাড়া বিদেশেও তার যাতায়াত রয়েছে। বিদেশে অনেক জায়গায় গিয়ে তিনি নিজের মতবাদ প্রচার করে এসেছেন। দেশ-বিদেশে তার যাবতীয় আশ্রমের অ্যাকাউন্ট দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রী পদ্মাবতী এবং ছেলে এনকেভি কৃষ্ণ।
আয়কর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তার প্রতিটা আশ্রমেরই হিসাব ছাড়া আয় রয়েছে। সেই আয় সরকারের কাছে গোপন রাখা হতো। এই তথ্য হাতে পাওয়ার পরই ১৬ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন আশ্রমে তল্লাশি শুরু করেন আয়কর অফিসাররা।
এসব আশ্রমে ১৮ কোটি টাকার মূল্যের নগদ মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮৮ কেজি সোনা, যার মূল্য ২৬ কোটি টাকা এবং ১ হাজার ২৭১ ক্যারাটের হীরা।
সব মিলিয়ে মোট ৫০০ কোটি টাকারও বেশি হিসাব ছাড়া সম্পত্তি সিজ করেছেন আয়কর অফিসাররা।