ওমর ফারুক ও স্ত্রী-পুত্রদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করলো এনবিআর

0

সময় এখন ডেস্ক:

যুবলীগ চেয়ারম্যানের পদ থেকে অ’ব্যাহতি পাওয়া ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

একই সঙ্গে তার স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে। ফলে তারা কোনো টাকা তুলতে বা স্থানান্তর করতে পারবেন না। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৬ ধারার ক্ষমতাবলে সম্প্রতি এনবিআর এ আদেশ দিয়েছে।

ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে এনবিআর বলেছে, ওমর ফারুক চৌধুরী, তার স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো টাকা তুলতে বা স্থানান্তর করা যাবে না। একই তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লেক ভিউ প্রোপার্টিজ ও রাও কনস্ট্রাকশনের হিসাবের লেনদেনও বন্ধ করেছে এনবিআর।

চিঠিতে তাদের বর্তমান ঠিকানা দেয়া হয়েছে ধানমন্ডির ৮/এ সড়কের ইস্টার্ন হেরিটেজ, রমনার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের ৪৫ নম্বর বাসা ও চট্টগ্রামের রাউজানের সূত্রাপুর।

এর আগে ৩ অক্টোবর ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তার নামে থাকা সব হিসাবের লেনদেন তথ্য, বিবরণীসহ সব পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট।

সম্প্রতি যুবলীগের বিভিন্ন নেতার বিরু’দ্ধে দুর্নীতি, অ’বৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেকে সংগঠন‌টির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর নামও উঠে আসে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরো’ধী অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীমসহ অনেকেই। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সম্পৃক্ততাও বেরিয়ে আসে।

তার আলোকে ইতিমধ্যেই ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব করা ছাড়াও তার বিদেশ যাত্রার ওপর নি’ষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর পর থেকেই আড়ালে চলে যান ওমর ফারুক। এই পরিস্থিতিতে তাকে ছাড়াই সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সংগঠনটি। তাকে ছাড়াই হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সভা।

অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিজের অনুগতদের বসিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। ঢাকা মহানগর ও দেশব্যাপী জেলা কমিটিগুলোও হয়েছেন তার পকেটের লোক দিয়ে।

৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের দায়িত্ব পেয়েই ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। সাবেক নেতাদের পরামর্শ ছাড়াই একটি বিশাল কমিটি গঠন করেন তিনি।

অভিযোগ আছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি অনেক নেতাকে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পদভেদে ১০ লাখ থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। ফ্রিডম পার্টি ও যুবদলের অনেকে টাকার বিনিময়ে ঠাঁই পেয়েছেন যুবলীগে।

ওমর ফারুক চেয়ারম্যান হওয়ার পর যুবলীগে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন সুবিধাভোগী ও দু’র্বৃত্তরা। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক সময়কার পিয়ন আনিসুর রহমান কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক পদ পেয়ে যান ওমর ফারুকের কল্যাণে। পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে এমন অনেককে নেতা বানানোর ক্ষেত্রে আনিসুর রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।

আনিস যুবলীগ অফিসের ৩ হাজার টাকা বেতনের পিয়ন থেকে এখন বিপুল সম্পদের মালিক। তিনি ওমর ফারুক চৌধুরীর ‘কালেক্টর’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ৩০ লাখ থেকে কোটি টাকার বিনিময়ে আনিসের মাধ্যমে পদ পেয়েছেন অনেকেই।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!