ফেনী প্রতিনিধি:
সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাসন্তান নিয়ে আদালতে ফাঁ’সির রায় শুনল ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হ’ত্যায় অংশ নেয়া কামরুন নাহার মণি। নুসরাতের সহপাঠী ও বান্ধবী ছিলেন মণি। ৫ মাসের গর্ভের সন্তান নিয়েই নুসরাত কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে রায় ঘোষণার আগে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ান মনি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যা’তন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ মণিসহ সব আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।
কাঠগড়ায় ওঠার আগে মণি তার সন্তানকে কোলে করে নিয়ে যান আদালত প্রাঙ্গণে। সে সময় শিশুটির শরীরে একটি তোয়ালে পেঁচানো অবস্থায় দেখা যায়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কারাব’ন্দি কামরুন নাহার মণির প্রসব বেদনা শুরু হলে দ্রুত তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১২টায়, অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর মণির কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে।
মামলার বিচারকাজ শুরু হলে মণিকে প্রতি কার্যদিবসে আদালতে হাজির করা হয়। তার আইনজীবী কয়েকবার জামিন চাইলেও আদালত না-মঞ্জুর করেন।
অন্তঃসত্ত্বা থাকার কারণে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অ’ব্যাহতি দিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে বিচারকাজে অংশ নেয়ার আবেদন জানালে আদালত সেটাও না-মঞ্জুর করেন।
গর্ভে সন্তান রেখেই নুসরাত জাহান রাফি হ’ত্যায় অংশ নেন কামরুন নাহার মণি। তিনিই প্রথম নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, হ’ত্যায় অংশ নেওয়া তার ৩ সহযোগী পুরুষের জন্য ৩টি বোরকা ও হাতমোজা সংগ্রহ করেছিলেন ঘটনার আগে।
নুসরাত জাহান রাফি হ’ত্যার দায় স্বীকার করে মামলার প্রধান আসামি শামীমের জবানব’ন্দিতে মণির কথা উঠে আসে। পরে মণি আদালতে স্বীকারো’ক্তিমূলক জবানব’ন্দি দেন। সেখানে তিনি তার দোষ স্বীকার করে নিয়ে এসব কথা বলেছিলেন।
কামরুন নাহার মণি সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঈমান আলী হাজি বাড়ির প্রয়াত বিজিবি সদস্য আজিজুল হকের পালিত মেয়ে।
নুসরাতের সঙ্গে তিনিও আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মামলার ১৬ নম্বর আসামি।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা শুরুর আগে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে পুড়িয়ে হ’ত্যার চেষ্টা করা হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মা’রা যান।
597