চোখে চোখে রাখা হয়েছে হেভিওয়েট নেতাদেরকেও

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশের মত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও শুদ্ধি অভিযান চলছে। এই অভিযানে দলের অনেক হেভিওয়েট নেতাই ধরা’শায়ী হয়েছেন। অনেকে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছেন।

বিভিন্ন সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা এখন দেশের বাইরে গা ঢাকা দিয়েছেন। কিন্তু সংস্থাগুলো বলছে, যেখানেই যে গা ঢাকা দিক না কেন যারা দুর্নীতি-অ’নিয়ম করেছে তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাদের বিরু’দ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরু’দ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে যে, আওয়ামী লীগের ৫ জন প্রভাবশালী নেতা গোয়েন্দা সংস্থার ক্লোজ মনিটরিংয়ে আছেন। তাদের বিরু’দ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। এই তদন্তে যদি তাদের অ’পকর্মের সত্যতা মেলে, তাহলে তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, এই ৫ নেতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন শুদ্ধি অভিযানের সঙ্গে জড়িত আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সবুজ সংকেত দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকে ক্লোজ মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে তারা হলেন-

ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর

ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের একজন প্রভা’বশালী নেতা। তিনি ফার্মার্স ব্যাংকের একজন প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা। তার নেতৃত্বেই ফার্মার্স ব্যাংকে নানা রকম অ’নিয়মের ঘটনা ঘটেছে। ফার্মার্স ব্যাংক প্রায় দে’উলিয়া হয়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে এই ব্যাংকের নাম বদলে পদ্মা ব্যাংক করা হয়েছে। এখানে ব্যাপক ঋ’ণ জা’লিয়াতি এবং নিয়ম বহির্ভূত লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোতে ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীরের সম্পৃক্ততার কিছু প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এগুলো নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের এক সময়কার প্রভা’বশালী নেতা। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি সমস্ত রাজনৈতিক তৎপরতা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে একরকম নি’র্বাসিত। তার বিরু’দ্ধে দুই ধরনের অভিযোগ আছে। প্রথমত, ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি যে দুর্নীতির মামলায় দ’ণ্ডিত হয়েছিলেন, সেই মওকুফের আদেশ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আইনের দৃষ্টিতে এই মামলাটি এখন চলমান।

দ্বিতীয়ত, তিনি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ত্রাণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে অনেক অ’নিয়ম পাওয়া গেছে। সেগুলোর বিষয়েও এখন তদন্ত হচ্ছে।

শাজাহান খান

আওয়ামী লীগের প্রভা’বশালী নেতা শাজাহান খান। শুধু আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে নন, পরিবহন খাতে তার প্রভা’ব সর্বজনবিদিত। এই শাজাহান খানও এখন ক্লোজ মনিটরিংয়ে রয়েছেন। তার বিরু’দ্ধে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন রকম অ’নিয়মের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও তার বিরু’দ্ধে পরিবহন শ্রমিকদের উ’স্কে দেওয়ার বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

আবদুস সোবহান গোলাপ

আবদুস সোবহান গোলাপ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। তার বিরু’দ্ধে আওয়ামী লীগে কমিটি বাণিজ্য এবং হাইব্রিডদের দলে অনু’প্রবেশ করানোর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগের সহ সম্পাদক পদে কেনা বেচার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়টিও তদন্তাধীন রয়েছে।

জাহাঙ্গীর কবির নানক

রাজধানীর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব গ্রেপ্তারের পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিরু’দ্ধে নতুন করে অভিযোগ উঠছে। তার পৃষ্ঠপোষকতায় রাজীবের উ’ত্থান ঘটেছিল বলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। রাজীব তার অ’বৈধ সম্পদের ভাগ জাহাঙ্গীর কবির নানককে দিতেন কি না এ বিষয়টিও গোয়েন্দারা খ’তিয়ে দেখছেন।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বলছে যে, যারা ক্লোজ মনিটরিংয়ে আছেন তারা প্রত্যেকেই যে অপরাধী এমনটা নয়। তাদের বিরু’দ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। এই অভিযগগুলো খ’তিয়ে দেখা হচ্ছে। খ’তিয়ে দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বাংলাইনসাইডার

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!