স্পোর্টস ডেস্ক:
এবার জাতীয় লিগের আগে ফিল্ডিং অনুশীলন করতে দেখা যাচ্ছে মি. ডিপেন্ডেবলখ্যাত মুশফিকুর রহিমকে। গ্লাভস ছাড়া হাইক্যাচ ধরাও শিখছেন তিনি। এবার কিপিং অনুশীলনে তাকে দেখা যাচ্ছে না। তবে কি লাল-সবুজ জার্সির গায়ে উইকেটের পেছনে আর দেখা যাবে না মুশফিককে?
জবাবটা মুশফিক নিজেই দিলেন। তিনি জানালেন, শুধু টেস্ট ক্রিকেটে কিপিংয়ের দায়িত্ব থেকে বিরতি চান। বিষয়টি এখন কোচ ও নির্বাচকদের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।
তবে কি জাতীয় দলের হয়ে টেস্টে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সম্ভাবনা আছে মুশফিকের? মুশফিকের এমন সিদ্ধান্তের পেছনের কারন তার কিপিং নিয়ে সমালোচনার বিষয়টি কাজ করছে কিনা, এ ভাবনাও আসতে পারে ক্রীড়ামহলে। তাই বিষয়টি পরিস্কার করলেন মুশফিক।
তিনি বলেন, আমি আসলে আমার ওয়ার্কলোড কমাতে চাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি বিপিএল, ডিপিএল খেলছি। সব ফরম্যাটেই খেলছি। আর সব খেলায় একটানা উইকেটের পেছনে থাকলে বিষয়টি শরীরের ওপর একরকম চাপের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি তার ওপর একটু ওভারলোড হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন এ ক্রিকেটার। সে জন্যই টেস্টে আপাতত আর কিপিং করছেন না বলে সিদ্ধান্ত নিলেন মুশফিক।
মুশফিক জানালেন, শুধু তাই নয়। লম্বা সময় ধরে পারফর্ম করতেই এমন সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, গত ৫ বছরে আমি বড় কোনো চোটে পড়িনি। কিন্তু বিশ্রামও সেভাবে নিতে পারিনি। নিয়মিত মাঠেই ছিলাম। আমি চাই না, এমন পরিস্থিতি আসুক যে, গুরুত্বপূর্ণ দু-একটি সিরিজে বিশ্রামে যেতে হচ্ছে বা ইনজুরিতে পড়ে ম্যাচ ছাড়তে হচ্ছে।
তিনি জানান, সামনে টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশের। আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। সব ফরম্যাটে মিলিয়ে অনেক অনেক ম্যাচ রয়েছে ভবিষ্যতে। মুশফিক চান আন্তর্জাতিক সব ফরম্যাটের খেলাতেই যেন অংশ নিতে পারেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি নিজেকে ফিট রেখে সব খেলায় অংশ নিতে চাই। বয়স তো ৩২ পেরোলো। তাই শরীরের ওপর কতটা চাপ দেয়া সম্ভব তা এখন খেয়াল রাখা উচিত।
তিনি যোগ করেন, নিজের ওয়ার্কলোড যদি একটু কমাই, আমার মনে হয় যে, নিজের সেরাটা আরও লম্বা সময় ধরে দিতে পারব। তাই সবকিছু মাথায় রেখেই টেস্টে আপাতত কিপিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিক। এভাবেই ক্যারিয়ার লম্বা করার ইঙ্গিত দিলেন জাতীয় দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য এই খেলোয়াড়।
তবে সেরাটা না দিতে পারলে দলের বোঝা হয়েও থাকতে চান না এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
তার মুখে সোজাসাপ্টা জবাব, কোনোমতে একাদশে টিকে থেকে খেলব, এটি আমি কখনই চাই না। যেখানেই খেলব, আমি যেন নিজের সেরাটা দিতে পারি। পারফর্ম্যান্স সব সময় সমান হবে না। তবে সেরাটি দেয়ার সামর্থ্য যেন থাকে। তবে যেদিন ভালো না খেলব, সেদিন নিজেই জায়গাটা ছেড়ে দেব।
মুশফিকের এমন সব বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, মূলত টেস্টে ওয়ার্কলোড কমাতেই কিপিংটা ছাড়তে চাচ্ছেন মুশফিক। বিষয়টি এমন নয় যে, কিপিং করলে ব্যাটিং ভালো করতে পারবেন না।
কারন কিপিং করেও ভালো ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। কিপিং করে তার ব্যাটিং রেকর্ড তুলনামূলক অনেক ভালো। সবকটি টেস্ট সেঞ্চুরির ম্যাচে কিপিংও করেছেন। তার দুটি ডাবল সেঞ্চুরি এসেছে সেই ম্যাচে টানা কিপিং করেই।
পরিসংখ্যান বলছে, কিপার হিসেবে ১০৪ ইনিংসে মুশফিকের ব্যাটিং গড় ৩৭। আর কিপিং না করে ২১ ইনিংসে ২৪.৪৭।
তবে বিষয়টি পুরোপুরি কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন মুশফিক। তারা কিপিং করতে বললে দলকেই সবার আগে প্রাধান্য দেবেন। তবে তার ইচ্ছা টেস্টে কিপিং না করার।