স্পোর্টস ডেস্ক:
তিনি ক্রিকেট ছেড়েছেন আরও ৮ বছর আগে। ২০১১ সালে খেলেছেন সর্বশেষ ওয়ানডে, ২০১০ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি এবং ২০০৭ সালে খেলেছেন শেষ টেস্ট। ৮ বছর পর এসে পাকিস্থানের এক সময়ের গতি তারকা শোয়েব আখতার দাবি করছেন, তার সময়ে তিনি খেলতে নামতেন ২১ জনের বিপক্ষে।
কেন, ২১ জনের মোকাবেলা করতেন তিনি? এ প্রশ্নের জবাবে শোয়েব আখতার যা বললেন, তাতে নিজ দলের ক্রিকেটারদেরই বড় ধরনের অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার দাবি, পাকিস্থান দলে যাদের সঙ্গে তিনি খেলতেন, সবাই ছিলেন জুয়াড়ি। তিনি একাই ছিলেন ভালো।
এ কারণেই প্র’তিপক্ষের ১১ জন এবং নিজ দলের সতীর্থ ১০ জন, এই মোট ২১ জনের বিপক্ষে খেলতে হতো শোয়েব আখতারকে। পাকিস্থানের এক টিভি টক শোতে উপস্থিত হয়ে এমন মন্তব্য করেন শোয়েব। তিনি বলেন, আমার আশেপাশে তো সব সময় ম্যাচ ফিক্সিংয়ের পাণ্ডারা থাকতো!
স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে শোয়েবের এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্যের তীর পাকিস্থানের সাবেক ক্রিকেটারদের দিকেই। যাদের অনেকের বিরু’দ্ধেই ফিক্সিংয়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল এবং কেউ কেউ শা’স্তিও পেয়েছেন।
তবে শোয়েব আখতার বিশেষভাবে নাম উল্লেখ করেছেন, দুই কলঙ্কিত পেসার মোহাম্মদ আমির এবং মোহাম্মদ আসিফের।
শোয়েব বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি, দেশের হয়ে খেলতে নেমে কখনও প্র’তারণা করতে পারি না। কখনও ম্যাচ ফিক্সিং করার কথা ভাবতেও পারি না; কিন্তু আমার চারপাশে তো ফিক্সিংয়ে পাণ্ডারা ছিল। আমি ২১ জনের বিরু’দ্ধে খেলতাম। প্র’তিপক্ষের ১১ জন, আমাদের বাকি ১০ জন। কে জানত, কে ফিক্সিং করতো না!
২০১০ সালের লন্ডনগেট কেলে’ঙ্কারির ঘটনার সময়টাতেও খেলছিলেন শোয়েব আখতার। যে সময়ে (২০১১ সালে) আমির-আসিফ-সালমান বাটদের বি’পক্ষে শা’স্তি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনও তিনি ওয়ানডে থেকে অবসর নেননি। অর্থাৎ সতীর্থ হিসেবে তিনি পেয়েছেন এই ৩ ক্রিকেটারকেই। এ কারণে তাদের দিকে সহজেই আঙ্গুল তুলে দিতে পেরেছেন তিনি।
পাকিস্থানের ‘টক শো’য় করা শোয়েবের মন্তব্য ইতিমধ্যেই ক্রিকেট দুনিয়ায় তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কারণে বারবারই পাকিস্থান ক্রিকেট কল’ঙ্কিত হয়ে এসেছে। লর্ডসে আমিরের সেই কু’খ্যাত ‘নো বল’ অধ্যায় কেউ ভোলেননি।
ওই সময় স্পট ফিক্সিং কেলে’ঙ্কারিতে জড়ানো আমির, আসিফ এবং তাদের দলের অধিনায়ক সালমান বাট- ৩ জনই ৫ বছর করে নি’ষিদ্ধ হন। পরে আমিরের শা’স্তি কমিয়ে দেয় আইসিসি এবং তিনি ফিরে এসে দারুণ বোলিং করে হারানো সম্মান কিছুটা ফিরিয়ে আনেন।
২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্থান। ওই জয়েও বড়সড় ভুমিকা রাখেন আমির। যদিও শোয়েব ক্ষমার চোখে দেখতে নারাজ। বলে দিচ্ছেন, ওই সময় কত ম্যাচ যে ফিক্সিং হয়েছিল, হিসাব নেই। আসিফ নিজে আমাকে বলেছিল, কত ম্যাচ ওরা ফিক্সিং করেছিল এবং কীভাবে করেছিল।
ইংল্যান্ডে আসিফ এবং আমির ম্যাচ ফিক্সিং করেছেন শুনে ক্ষি’প্ত হয়ে ওঠেন শোয়েব। তিনি বলেন আমি ওদের কত করে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কী দারুণ প্রতিভা ছিল ওরা। পুরো ন’ষ্ট হয়ে গেল। আমি যখন শুনলাম, ওরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, খুব রে’গে গিয়েছিলাম। এতটাই হতা’শ হয়েছিলাম যে, আমি দেওয়ালে সজোরে ঘুষি মেরে বসি।
৪৪ বছরের সাবেক পেস বোলারের আক্ষেপ, পাকিস্থানের সেরা দুই পেস প্রতিভা ছিল আমির-আসিফ। দারুণ বল করত, বুদ্ধিমান বোলারও ছিল। দেশের জন্য আদর্শ দুই ফাস্ট বোলার; কিন্তু শেষ হয়ে গেল। অল্প কিছু টাকার জন্য নিজেদের বিক্রি করে দিল ওরা।
314