বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক:
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, ইতিপূর্বে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হতো। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আর বিদেশ থেকে আমদানি নয়, আমরা নিজেরাই স্মাট কার্ড তৈরি করব। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্মার্ট কার্ড তৈরি হচ্ছে।
সুতরাং স্মার্ট কার্ড আমদানি না করে দেশের চাহিদা পূরণ করার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই স্মার্ট কার্ড তৈরি হচ্ছে। আমাদের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে জানা গেছে অদূর ভবিষ্যতে আমরা স্মার্ট কার্ড আমদানি করবো না, রপ্তানি করবো। ২০২১ সালের জুলাই থেকে স্মার্ট কার্ড বিদেশে রপ্তানি হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম’ উদ্বোধনকালে একথা বলেন তিনি।
অনলাইনে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত কার্যক্রম উপস্থাপন করে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার পর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুরসহ নানা দেশে কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশি প্রবাসীদের ইউরোপ ও আমেরিকায় ভোটার হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু দেশে এসে ভোটার হওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এজন্য তাদের ভোটার করার জন্য নির্বাচন কমিশন সুদূরপ্রসারী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একজন প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে পাসপোর্ট তৈরি করারসহ যে কোনো কাজে বিদেশে এটি ব্যবহার করতে পারেন। তারা সহজেই জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন।
কাজের সুবিধার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিভিন্ন দপ্তর ও মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য। এমনকি জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে প্রবাসীদের ভোটার ও জাতীয় স্মার্ট কার্ড দেয়ার জন্য জানানো হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন সময় ইসিতে চিঠি দেয়া হয়। এসব কারণে নির্বাচন কমিশন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিদেশে স্মার্ট কার্ড রপ্তানির কথা বললেও আসল চিত্র কিন্তু ভিন্ন। দীর্ঘদিন ইসি বলে আসছে, তারা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) দেশবাসীর হাতে তুলে দেবে। কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সেই কাজ বাস্তবায়নে ব্যর্থ ইসি। নাগরিকদের বড় অংশ স্মার্ট কার্ড এখনও তো পাইইনি, বরং যারা স্মার্ট কার্ড সংশোধন করছেন, তাদেরও দেয়া হচ্ছে সংশোধিত ২ বছর মেয়াদি স্বল্পকালীন অ্যানালগ জাতীয় পরিচয়পত্র। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষো’ভের সঞ্চার হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন এবং এ কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের অবহেলার কারণে প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন না প্রায় ৩০ লাখ নাগরিক।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ইসির এক সভায় আলোচনা হয়। সভা সূত্র জানায়, মাঠপর্যায়ে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৪টি স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হলেও এখনও তা বিতরণ শুরু করছে না ইসি। অন্যদিকে বিতরণ চলমান থাকা উপজেলা/থানায় ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫২২টি স্মার্ট কার্ড অবিতরণকৃত অবস্থায় রয়েছে।