দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাকেন্দ্রে চিকিৎসক না এসে অসুস্থ এক পরীক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিতে বাগান মালিকে পাঠিয়েছেন ডাক্তার।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চাঁদপুর মাদ্রাসায় জেডিসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরই ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়োগকৃত (অন-কল) হাসপাতালের ডা. মশিউর রহমানকে মোবাইল ফোনে ডাকা হয়।
তবে ওই চিকিৎসক কেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালের বাগান মালিকে ওই ছাত্রীকে চিকিৎসা দিতে পাঠান বলে জানান শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আ ছ ম হুমায়ুন কবীর জানান, সকাল ১০টা থেকে জেডিসির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। বেলা ১১টার দিকে কানিকাটাল দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ফাহিমা খাতুন মাথা ঘুরে প’ড়ে যায়। এ সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়োগকৃত (অন-কল) হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমানকে মোবাইল ফোনে ডাকা হয়।
ফোনে ডা. মশিউর রহমান বলেন, আপনি অনারিয়াম দেন না, তাই আপনার কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না; অসুস্থ ছাত্রীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্রীকে হাসপাতালে নেয়ার খবর শুনে কেন্দ্র সচিব ও উপস্থিত শিক্ষকরা দিশে’হারা হয়ে পড়েন। তারা তড়িঘড়ি করে মাদ্রাসার পাশের একটি স্থানীয় চিকিৎসককে ডেকে এনে ছাত্রীর চিকিৎসা করালে কিছুক্ষণ পর ছাত্রী সুস্থ হয়ে পুনরায় পরীক্ষা দিতে বসে।
ছাত্রী সুস্থ হওয়ার অনেক পর পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসপাতালের সেই চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান কেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালের বাগান মালিকে ওই ছাত্রীর চিকিৎসা দিতে পাঠান বলে জানান কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আ ছ ম হুমায়ুন কবীর।
ডা. মশিউর রহমান বলেন, বিগত পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকার পরও কেন্দ্র সচিব অনারিয়াম দেননি। এ কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে না গিয়ে হাসপাতালের বাগান মালি আতোয়ার রহমানকে পাঠিয়েছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অনারিয়াম না পাওয়ার অজুহাতে অসুস্থ পরীক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিতে না আসায় অন্যান্য শিক্ষক ও অভিভাবক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নূর হোসেন মিয়া ডাক্তারের এই আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসক কাজটি ঠিক করেননি।
বিরামপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, অনারিয়ামের কারণে অসুস্থ ছাত্রীকে চিকিৎসা দিতে না যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীকে চিকিৎসা দিতে না যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।