বিশেষ প্রতিবেদন:
সুইস ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্টে গত ১ বছরে বাংলাদেশী গ্রাহকদের ১ হাজার ৩শ কোটি টাকা জমা পড়েছে, এটা গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু এই টাকা কাদের তা নিয়ে নানা আলোচনা এবং গুঞ্জন চলছে। গত বছর ছিল নির্বাচনের বছর।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের ৪টি ব্যাংকে এই টাকাগুলো গচ্ছিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইউএসবি ব্যাংক, ক্রেডিট সুইস, জুরিখ কন্টিনেটাল ব্যাংক ও এএফজি ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক।
অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, তারেক জিয়ার মেয়ে জাইমা রহমানের অ্যাকাউন্ট রয়েছে ২টি সুইস ব্যাংকে। এই দুই অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি টাকায় অন্তত ২শ কোটি টাকা জমা হয়েছে। তারেক জিয়ার স্ত্রী ড. জোবায়দা রহমানের নামে রয়েছে আরও ২টি অ্যাকাউন্ট। সেগুলোতে জমা পড়েছে ১৭৫ কোটি টাকা। তারেকের প্রয়াত ভাই কোকোর স্ত্রী শর্মীলা রহমান সিঁথির একটি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ১২৫ কোটি টাকা।
ধারণা করা হচ্ছে যে, নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকাই সুইস ব্যাংকে জিয়া পরিবারের অ্যাকাউন্টগুলোতে জমা পড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের বিভিন্ন সময় শুধু জিয়া পরিবারের ৩ সদস্যের নামেই প্রায় ৫শ কোটি টাকা জমা পড়েছে। টাকাগুলো জমা পড়েছে জুলাই থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে। এতে করে বুঝতে অ-সুবিধা হয় না যে, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্যই এই টাকা জমানো হয়েছে।
শুধু জিয়া পরিবারের ৩ সদস্যই নয়, সুইস বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং তার পুত্র তাবিথ আউয়ালের। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীরও একটি অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। এছাড়া অ্যাকাউন্ট আছে, বিএনপির অন্যতম নেতা মোরশেদ খান এবং তার ছেলে ফয়সাল খানের নামেও। সব মিলে শুধু বিএনপি নেতৃবৃন্দের নামেই আছে প্রায় হাজার কোটি টাকার মতো।
এছাড়া শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীন সোশ্যাল বিজনেস (সামাজিক ব্যবসা) এর নামেও সুইস ব্যাংকে ২টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওখানে তার একটা স্থায়ী আমানত আছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়ে যে অর্থ তিনি পেয়েছিলেন তার পুরোটাই তিনি সেখানে জমা রেখেছেন বলে ধারণা করা হয়। ওই টাকা তিনি দেশে আনেননি। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন দেশে যে সামাজিক যোগাযোগ ব্যবসা করছেন এবং বক্তৃতা দিচ্ছেন সেই টাকা সুইস ব্যাংকেই তিনি জমা রাখছেন বলে জানা যায়।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, লন্ডনে কঠোর নজরদারি থাকার কারণে তারেক জিয়ার পরিবার টাকা লেনদেনের নিরাপদ জায়গা হিসেবে সুইজারল্যান্ডকে বেছে নিয়েছে। কারণ এখানে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় এবং টাকা যিনি রাখেন তাকে সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্রিটেনে থাকার কারণে এবং অ-বৈধ লেনদেনের কানেকশন থাকার কারণে তারেক জিয়া অর্থ ঠিকই তুলতে পারেন। এই অর্থগুলো দিয়েই তিনি লন্ডনে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলাইনসাইডার
10.8K