বাংলাদেশের ভ’য়াবহ ১১টি ট্রেন দুর্ঘটনার বিবরণ

0

ফিচার ডেস্ক:

বাংলাদেশে সড়কপথে দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি। আর সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হয় ট্রেনকে। তবে সামান্য ভুলে কখনো কখনো ট্রেনেও বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এর বেশিরভাগ হয় লাইন’চ্যুত হয়ে বা মুখোমুখি সংঘ’র্ষে। তবে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে সবমিলিয়ে সবচেয়ে ভ’য়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১টি। তেমন কিছু ভ’য়াবহ দুর্ঘটনা নিয়ে এই ফিচার-

সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা: ১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি টঙ্গীর কাছে মাজুখানে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘ’র্ষে ১৭০ জন যাত্রী নিহ’ত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ৪০০ জন। এছাড়া ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের কাছাকাছি ট্রেন লাইন’চ্যুত হয়। এতে ১৩ জন নিহ’ত হন ও ২০০ জন আহত হন।

সেতু ভেঙে দুর্ঘটনা: ১৯৮৩ সালের ২২ মার্চ ঈশ্বরদীর কাছে একটা রেল সেতু দিয়ে চলার সময় ভে’ঙে পড়ে। সাথে সাথে পরপর কয়েকটা স্প্যান ভেঙে পড়ে। কয়েকটি বগি নিচে শুকনো জায়গায় পড়ে। এ দুর্ঘটনায় ৬০ জন যাত্রী নিহ’ত হন।

আগুন ধরে দুর্ঘটনা: ১৯৮৫ সালের ১৩ জানুয়ারি খুলনা থেকে পার্বতীপুরগামী সীমান্ত এক্সপ্রেসের কোচে আগুন ধরে যায়। এতে ২৭ জন যাত্রী নিহ’ত হন এবং ২৭ জন আহত হন।

সর্বহারার না’শকতা: ১৯৮৬ সালের ১৫ মার্চ সর্বহারার না’শকতায় ভেড়ামারার কাছে ট্রেন লাইন’চ্যুত হয় এবং নদীতে পড়ে যায়। এতে ২৫ জন যাত্রী নিহ’ত হন এবং ৪৫ জন আহত হন।

হিলি ট্র্যাজেডি: ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯টায় গোয়ালন্দ থেকে পার্বতীপুরগামী ৫১১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি হিলি রেলস্টেশনের ১ নম্বর লাইনে এসে দাঁড়ায়। এর কিছুক্ষণ পর সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী ৭৪৮ নম্বর আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই লাইনে ঢুকে পড়ে। এ সময় মুখোমুখি সংঘ’র্ষে গোয়ালন্দ লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ২টি বগি আন্তঃনগর ট্রেনের উপর উঠে যায়। এতে দুটি ট্রেনের অর্ধশতাধিক যাত্রী নিহ’ত হয়। আহত হয় ২ শতাধিক।

নরসিংদীর দুটি ঘটনা: ২০১০ সালে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ‘মহানগর গোধূলি’ ও ঢাকাগামী মেইল ‘চট্টলা’ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘ’র্ষে দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় দুটি ট্রেনের ইঞ্জিন দুমড়ে-মুচড়ে যায়। চট্টলা ট্রেনের একটি বগি মহানগর ট্রেনের ইঞ্জিনের উপর উঠে যায়। সেই দুর্ঘটনায় চালকসহ মোট ১২ জন নিহ’ত হন। এরপর ২০১৬ সালে নরসিংদীর আরশীনগর এলাকায় ভুল সিগন্যালের কারণে লাইন’চ্যুত হয় তিতাস কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন। ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিল। এতে ২ জন নিহ’ত ও ১০ আহত হন।

টঙ্গীর রেল দুর্ঘটনা: ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইন’চ্যুত হয়ে ৫ জন নিহ’ত হন। কমিউটার ট্রেনটি জামালপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। টঙ্গী এসেই ঘটে যত বি’পত্তি। ট্রেনের ৫টি বগি লাইন’চ্যুত হয়ে যায়। টঙ্গীর নতুনবাজার এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-জয়দেবপুর রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক।

কুলাউড়ায় দুর্ঘটনা: ২০১৯ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভ’য়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ৪টি বগি লাইন’চ্যুত হয়ে খালে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় ৬ জন নিহ’ত হন। নিহ’তের মধ্যে ৩ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ। সেদিন রাত ১২টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে ঢাকাগামী উপবনের বগি ছিটকে পড়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘ’র্ষ: জেলার কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘ’র্ষে ১৭ জন নিহ’ত হন। ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শতাধিক যাত্রী আহত হন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ১ নম্বর লাইনে ঢুকছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে আউটারে থাকার সিগন্যাল দেয়া হয়। চালক সিগন্যাল অ’মান্য করে মূল লাইনে ঢুকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জাগোনিউজ

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!