ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় নওশিন আহম্মদ দিয়া (২৯) নাম এক প্র’সূতির মৃ’ত্যু ঘটেছে- এমন অভিযোগ এনে ৩ চিকিৎসকের বিরু’দ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) ব্রহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মৃ’ত দিয়ার বাবা শিহাব আহম্মদ গেন্দু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়াস্থ খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়ল হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. ডিউক চৌধুরী ও তার ক্লিনিকের ২ চিকিৎসক- অরুনেশ্বর পাল এবং মো. শাহাদাৎ হোসেন রাসেল।
আসামিরা দিয়ার মৃ’ত্যুর পর তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দ্রুত ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান দিয়া কয়েক ঘণ্টা আগেই মা’রা গেছেন।
বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য দিয়ার ডেডবডি কবর থেকে ওঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শহরের মুন্সেফপাড়াস্থ ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নওশিন আহম্মদ দিয়া প্র’সব বে’দনা নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু পুরোপুরি সেরে ওঠার আগেই দিয়াকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ায় হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার স্বামীর বাড়িতে নেয়া হয় তাকে।
৪ নভেম্বর ভোরে দিয়ার খুব মাথা ব্যথা শুরু হলে তাকে আবারও ওই হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডিউক চৌধুরী ও চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল অভি এবং মো. শাহাদাত হোসেন রাসেল ভুল ইনজেকশন এবং ও’ষুধ প্রয়োগ করার পর দিয়া অ’জ্ঞান হয়ে পড়েন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, দিয়ার অ’জ্ঞান হওয়ার বিষয়টি গোপন করে চিকিৎসার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন তারা। এ সময় দিয়ার স্বজনরা মেডিসিনের অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডাকতে বললে ডিউক ও বাকি দুই চিকিৎসক চুপ থাকেন। এক পর্যায়ে দিয়ার মৃ’ত্যু হলেও তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ওইদিন দুপুর ১টার দিকে দ্রুত তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন।
অ্যাম্বুলেন্সে করে দিয়াকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে পৌঁছানোর পর সেখানে চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা আগেই দিয়ার মৃ’ত্যু হয়েছে বলে জানান।
এদিকে ঘটনার পরই সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণে চলে যাওয়ার করার কারণে মামলার ব্যপারে ডা. ডিউক চৌধুরীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ডেডবডি তোলা হবে।