স্পোর্টস ডেস্ক:
ম্যাচের শুরুর দিকে লিওনেল মেসির পার্থক্য গড়ে দেওয়া একমাত্র গোলটির উৎস পেনাল্টির সিদ্ধান্তটি সঠিক নয় বলে মনে করছেন ব্রাজিল কোচ তিতে।
সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রীতি ম্যাচে দুই চিরপ্রতিদ্ব’ন্দ্বীর ল’ড়াইয়ের ত্রয়োদশ মিনিটে আর্জেন্টিনার জয়সূচক গোলটি করেন মেসি।
ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া মেসিকে ব্রাজিলের ডিফেন্ডার আলেক্সসান্দ্রো ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। বার্সেলোনা তারকার দুর্বল শট রুখে দেন গোলরক্ষক অ্যালিসন; কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান মেসি।
ম্যাচের পর গ্লোবো এস্পোর্তেকে তিতে বলেন, আমি পরিষ্কার দেখিনি। আমি জানি, কিছু কথা উঠেছে যে ওটা পেনাল্টি ছিল না। আমার মতেও এটা পেনাল্টি নয়।
ব্রাজিলের বি’পক্ষে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক মেসি
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩ মাসের নিষে’ধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরাটা দুর্দান্ত হলো লিওনেল মেসির। অধিনায়কের একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।
প্রথম ১৫ মিনিটে দুই দলই পেনাল্টি পায় একটি করে। লক্ষ্যভ্র’ষ্ট স্পট কিকে ব্রাজিলকে হতা’শ করেন গাব্রিয়েল জেসুস। ব্যর্থ হতে বসেছিলেন মেসিও। তবে গোলরক্ষক তার শট ঠেকানোর পর আলগা বল জালে ঠেলে দেন বার্সেলোনা তারকা।
ম্যাচের ৯ম মিনিটে ডি-বক্সে জেসুসকে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার লেয়ান্দ্রো পারেদেস ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে গোলরক্ষককে ঠিকই ফাঁকি দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার; কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। বল পোস্টের বাইরে কানায় লেগে চলে যায়।
৪ মিনিট পরই মেসির গোল, উচ্ছ্বাসে মাতে ২ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া মেসিকে ফাউল করে বসেন আলেক্সসান্দ্রো। এবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের দুর্বল শট রুখে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক অ্যালিসন; কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান মেসি।
বিরতির ঠিক আগে পাল্টা আক্র’মণে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু শটে তেমন জোর ছিল না, ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি অ্যালিসনের।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬ষ্ঠ মিনিটে পাল্টা আক্র’মণে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন জেসুস। কিন্তু শট নিতে দেরি করে ফেলেন তিনি। পরে উইলিয়ানের শটও প্র’তিহত হয়।
ম্যাচের ৬৬ তম মিনিটে মেসির দারুণ একটি ফ্রি-কিকে বল শেষ মুহূর্তে নিচু হয়ে ক্রসবার ঘেঁষে জালে জড়াতে যাচ্ছিল। লাফিয়ে কোনোমতে কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকান অ্যালিসন। ১০ মিনিট পর হের্মান পেস্সেইয়ার বুলেট গতির শটও কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিলের ত্রাতা এই গোলরক্ষক।
বল দখলে ব্রাজিল অনেকটা এগিয়ে থাকলেও আক্র’মণে আধি’পত্য করে আর্জেন্টিনা। শেষ দিকে প্রবল চাপ বাড়ানো দলটি বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করেছিল। ৮০ তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে প্রথম ছোঁয়ায় দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েও উড়িয়ে মেরে হতা’শ করেন লাউতারো মার্তিনেস।
ব্যবধান না বাড়লেও আর্জেন্টিনার জয়ের আনন্দ কমেনি এতটুকুও। শেষ বাঁশির বাজার সঙ্গে সঙ্গে সাইডলাইনে কোচ লিওনেল স্কালোনির মুখভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, এ জয়ে কতটা রোমাঞ্চিত তিনি।
কো-পা আমেরিকার সেমি-ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছিল মেসি ও তার দলের। এবারের লড়া’ইটা কোনো প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল নয়, তারপরও চিরপ্রতি’দ্বন্দ্বী বি’পক্ষে জয়ের মাহাত্ম্য সবসময়ই বিশেষ কিছু।
জুলাইয়ে ব্রাজিলের কাছে ওই হারের পর থেকে এখন পর্যন্ত অ-পরাজিত আর্জেন্টিনা। ৪টিতে জিতেছে, ড্র করেছে ২টি। জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যানের চেয়েও উল্লেখযোগ্য হলো, শেষ ৩ ম্যাচে আর্জেন্টাইনদের নজরকাড়া পারফরম্যান্স।
অক্টোবরে জার্মানির বি’পক্ষে ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সমতায় করেছিল দলটি। পরের ম্যাচে একুয়েডরকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৬-১ গোলে। আর এবার ব্রাজিলের বি’পক্ষে এই জয়।
অন্যদিকে, কো-পা আমেরিকা জয়ের পর থেকে যেন জিততেই ভুলে গেছে ব্রাজিল। এই নিয়ে টানা ৫ ম্যাচে জয়শূন্য রইলো তারা। এর মধ্যে হেরেছে ২টিতে, ড্র ৩টি।
173