সময় এখন ডেস্ক:
মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ছিল গত ১৬ নভেম্বর। সম্মেলনে আসা এক মলিন মুখের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
তিনি একসময়ের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা মোতাহার হোসেন রানা। মিরসরাই থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য। ১৯৯০ দশকে স্বৈ’রাচার এরশাদবিরো’ধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রথম কাতারের নেতা ছিলেন রানা।
মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে তার বাড়ি। সংসারে ৩ ছেলে, ৩ মেয়ে। সন্তানদের নিয়ে খুব ক’ষ্টে আছেন। নি’দারুণ অর্থক’ষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছেন।
এ অবস্থায় তার পাশে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।
তিনি বলেন, এখন থেকে আমি মোতাহার হোসেন রানার দায়িত্ব নিলাম। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ, তার চিকিৎসা খরচসহ প্রতি মাসে সম্মানী দেবো। যা তার ব্যক্তিগত হিসাবে জমা হবে।
এলিট বলেন, রানা ভাইয়ের বাড়িটিও আমি সংস্কার করে দেবো এবং একটি পাকা বাড়ি করে দেবো।
এর আগে সম্মেলনের বসা রানার ছবিটি প্রকাশিত হলে বিষয়টি অনেকের নজরে আসে। রানার দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন কাতার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা মোহাম্মদ রাজ রাজীবও।
রানা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান মনসুর যা বলেছেন:
আমরা যখন ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করি – তখন ফেসবুক ছিল না। দৈনিক পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের’ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের খবরাখবরেই জানতে পারতাম ডাকসাইটে ছাত্রনেতাদের নাম। সে রকমই একজন মোতাহার হোসেন রানা। মিরসরাই থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (মাইনুদ্দিন – ইকবালুর রাহীম)।
১৯৯০ দশকে স্বৈ’রাচার এরশাদেরবি’রোধী ছাত্র আন্দোলনে – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রথম কাতারের নেতা ছিলেন তিনি। আমার নিজেরও স্পষ্ট মনে আছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জ্বা’লাময়ী ভাষণের স্মৃতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক সভায় তৎকালীন বিরো’ধীদলীয় নেত্রী, আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে তিনি ৫ মিনিট বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। বক্তব্য শুনে নেত্রী এতো খুশি হয়েছিলেন তার নাম-ঠিকানা মঞ্চে সবার সামনে ডায়েরিতে টুকে নিয়েছিলেন।
ছবির এ উদভ্রা’ন্ত, ভ’গ্ন শরীরের, দারিদ্র্যের ছাপযুক্ত এই মানুষটিই সেই মাঠ কাঁপানো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা৷ গত ১৬ নভেম্বর ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল।… তারই ভিড়ে একাকী দর্শকের চেয়ারে পাবলিক হয়ে বসেছিলেন একসময়ের তুখোড় নেতা রানা ভাই। সভামঞ্চে তার হাতে গড়া কর্মী, সহযো’দ্ধাদের অনেকেই থাকলেও কেউ তার খবর নেননি, কেউ বলেনি আপনি স্টেজে আসুন। দলের সুদিনে অতীতের এরকম একজন ত্যাগী নেতার পাশে কি আমরা দাঁড়াতে পারি না?… একজন রাজনৈতিক কর্মীর শেষ জীবনের এরকম করুণ পরিণতি আমাদের কারোরই কাম্য নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাসান মনসুর বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তার ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে। তার ৩ ছেলে, ৩ মেয়ে। সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে আছেন। ইতিমধ্যে কিছু ফেসবুক বন্ধু তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দু’এক দিনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করবো।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার পাশে দাঁড়াতে চাই। কিন্তু রানার দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়টি বঙ্গবন্ধু কন্যার নজরে আনতে হবে।
30.9K