স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশ দলের তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে ধন্যবাদ জানাল ভারতীয় মিডিয়া। কারন মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চলমান ইডেন টেস্ট শেষ পর্যন্ত ৩য় দিনে গড়িয়েছে।
২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ইনিংস পরাজয়ই নয়, ২য় দিনেই অলআউট হওয়ার পথেই ছিল বাংলাদেশ।
সেই অবস্থা থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলকে খেলায় ফেরানোর পাশাপাশি ইডেন টেস্ট ৩য় দিনে নিয়ে যান মুশফিক। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজ হেডলাইন করেছে ‘ধন্যবাদ মুশফিকুর, রবিবার, ছুটির দিনে ইডেনে খেলা দেখতে পারবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা’।
২য় দিন শেষে ২য় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৫২ রান। ইনিংস পরাজয় এড়াতে হলে রোববার ৩য় দিনে মুশফিকদের আরও ৮৯ রান করতে হবে। এর ব্যাতিক্রম হলে ইন্দোর টেস্টের মতো ইনিংস পরাজয়ে হেরে যাবে টাইগাররা। ৫৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে দিবা-রাত্রির প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বি’পাকে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ১০৬ রানে।
জবাবে বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ৩৪৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। ২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে ২য় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেও সুবিধা করতে পারেনি টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ইশান্ত শর্মার গতির তাণ্ডবে ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
০ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক ও অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। ভারতীয় পেসার ইশান্ত শর্মার শি’কারে পরিণত হওয়ার আগে সাদমান ও মুমিনুল ৫ ও ৬ বল খেলার সুযোগ পান।
দলীয় ৯ রানে উমেশ যাদবের বলে মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদ সামির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন। তিনি ১২ বল খেলে করেন মাত্র ৬ রান। এর আগে প্রথম ইনিংসে এই উমেশ যাদবের বলেই স্ট্যাম্প উড়ে যায় মিঠুনের। ফেরেন ০ রানে।
এরপর দলীয় ১৩ রানে আউট হন ইমরুল কায়েস। জাতীয় দলের এ ওপেনার ইশান্ত শর্মার ৩য় শি’কারে পরিণত হন। থার্ড স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন কায়েস। প্রথম ইনিংসে ৪ রান করা ইমরুল দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরেন ৫ রানে।
১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার আশ’ঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। সেই অবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ভাগ্যের কি নি’র্মম পরিহাস।
ইনিংস পরাজয়ের শ’ঙ্কায় পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফিরিয়ে চোট নিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৫ম উইকেটে ৬৯ রানের অ-বিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ।
দলীয় ৮১ রানে ১৮.৩ ওভারে উমেশ যাদবের বলে সিঙ্গেল রান নেয়ার সময় মাহমুদউল্লাহর ডান পায়ের পেশিতে টান লাগে। চোট নিয়েই সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। তার আগে ৭ চারে ৩৯ রান করেন তিনি।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে মোহাম্মদ সামির বলে থার্ড ম্যানের উপর দিয় ছক্কা হাঁকিয়ে বিরাট কোহলিদের অবাক করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ছক্কা হাঁকিয়ে বাহবা পাওয়া মিরাজ নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি। ইশান্ত শর্মার বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর ঠিক পরের বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেনের মিরাজ। তার আগে মাত্র ১৫ রান করেন তিনি।
ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া মুশফিক, ইশান্ত শর্মাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ৬৯তম টেস্টে ২১তম ফিফটি তুলে নেন। টেস্টে এর আগে দেশের হয়ে ৬টি সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিক।
৮ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা তাইজুল ইসলাম ২য় দিনের একিবারে শেষ মুহূর্তে উমেশ যাদবের শি’কারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তাইজুল আউট হওয়ার পরই ২য় দিনের খেলার শেষ করেন দুই ফিল্ড আম্পায়র জোয়েল উইলসন ও মারাইস ইরেসমাস।
165