সময় এখন ডেস্ক:
বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ এখন বাংলাদেশ। বায়ু দূষণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের ধারে কাছেও নেই কোনো দেশ। প্রায় ২১ পিপিএম কম বায়ু দূষণ নিয়ে ২য় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্থান। এরপর ভারত, আফগানিস্তান, বাহরাইন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের সর্বশেষ তথ্য এগুলো।
তাদের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে গড় বায়ু দূষণের পরিমাণ ৯৭.১০, যেখানে পাকিস্থানের ৭৪.২৭, ভারতের ৭২.৫৪, আফগানিস্তানের ৬১.৮০ এবং বাহরাইনের ৫৯.৮০ পিপিএম।
এয়ার ভিজ্যুয়াল ঘণ্টায় ঘণ্টায় বায়ু দূষণের তথ্য হালনাগাদ করে।
আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের মধ্যে ৫ নম্বরে ছিল ঢাকা। ওই সময় ঢাকা শহরে বায়ু দূষণের পরিমাণ ছিল ১৭১ পিপিএম। তখন ২০৯ পিপিএম নিয়ে প্রথমে ভারতের দিল্লি, তারপর ১৯২ পিপিএম নিয়ে পাকিস্থানের লাহোর, ১৮৭ পিপিএম নিয়ে কলকাতা ও ১৮২ পিপিএম নিয়ে মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর ৪র্থ স্থানে ছিল।
তীব্র বায়ু দূষণের ফলে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সতর্কতা জারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
দূষণবিরো’ধী অভিযানে ১৪টি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বি’চ্ছিন্ন
বায়ুদূষণ বিরো’ধী অভিযান চালিয়ে রাজধানীর শ্যামপুর লাল মসজিদ এলাকায় ১৪টি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছি’ন্ন করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসের নেতৃত্বে সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে এ অভিযান শুরু হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুবিনা ফেরদৌস।
তিনি বলেন, যেসব কারখানায় তরল ব’র্জ্য থাকে সেখানে ইটিপি (তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার) ও এটিপি (এয়ার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমরা যেসব কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছি’ন্ন করেছি তাদের ইটিপি ও এটিপি ব্যবস্থা নেই। তাই আদালতের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে আমরা এ পদক্ষেপ নিয়েছি।
আদালতের কী নির্দেশ আছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ আছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছি’ন্ন করে দিলে কারখানা তো বন্ধ হয়েই যাবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এই পরিচালক আরও বলেন, এখানে যে কারখানাগুলো আছে তার অধিকাংশের বায়ুদূষণ রো’ধ সংক্রান্ত কোনো ব্যবস্থা নেই। আজ আমরা ১৪টি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছি’ন্ন করেছি। এছাড়া ২৫টি কারখানায় আদালতের ৩ মাসের নিষে’ধাজ্ঞা রয়েছে। নিষে’ধাজ্ঞা শেষ হলে ওগুলোতেও আমরা অভিযান চালাব।
রুবিনা ফেরদৌসের নেতৃত্বে চলা এ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহানগরের পরিচালক সোহরাব আলী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাকসুদুল ইসলাম ও কাজী তামজিদা আহমেদ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
এর আগে বায়ুদূষণ বিরো’ধী অভিযান চালাতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাব ও পুলিশ নিয়ে হাজির হন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি অভিযানে অংশ নিতে ওয়াসা ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও আসেন।
র্যাব ও পুলিশ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শ্যামপুর লাল মসজিদের সামনে উপস্থিত হওয়ার পর মসজিদের বিপরীত দিকে অবস্থিত সালমান প্লাজা সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন একদল শ্রমিক। এরপর দুপুর ১২টার দিকে ঘটনা স্থলে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বাবলা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি অভিযানে নেতৃত্ব দেয়াদের অভিযান না চালানোর অনুরো’ধ করেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করে অভিযানে নামেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা অভিযানে বের হলে সংসদ সদস্য বাবলা সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশ রয়েছে, সুতরাং অভিযান চালাতে হবে। ওনারা এখন অভিযান চালাবেন।