মুক্তিযো’দ্ধার সনদ ছেঁড়া ডাক্তারের সাজা চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

0

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূইয়াকে অ’পমান এবং মুক্তিযো’দ্ধা সনদ ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ শহীদুল্লাহর চিকিৎসা সনদ বাতিল ও গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ২৪ ঘন্টার আলটিমেটাম দিলো মুক্তিযু’দ্ধ মঞ্চ এবং আরও কয়েকটি সংগঠন এবং সচেতন ব্যক্তিবর্গ।

মুক্তিযু’দ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-

টাঙ্গাইল জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভুঁইয়ার মুক্তিযো’দ্ধা সনদ ছিঁড়ে ফেলা এবং অ’পমান করার অপরাধে চিকিৎসক শহীদুল্লা-এর চিকিৎসা সনদ বাতিল এবং গ্রেপ্তার দাবি করছে মুক্তিযু’দ্ধ মঞ্চ।

গত ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ইং তারিখে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন টাঙ্গাইলের রসূলপুর মহেড়া গ্রামের বীর মুক্তিযো’দ্ধা শাজাহান ভুঁইয়া। গত ২১ নভেম্বর উক্ত হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মো. শহীদুল্লাহ কায়সার সকালে ভিজিট করতে এসে রোগীর ফাইল দেখেন। ফাইলে রাখা মুক্তিযো’দ্ধা সনদ দেখে উক্ত চিকিৎসক তাঁর সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং মুক্তিযো’দ্ধা সনদ ছিঁড়ে ফেলেন।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এহেন ঘটনার বিরু’দ্ধে তীব্র নি’ন্দা ও প্র’তিবাদ জানাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসক শহীদুল্লাহ-এর চিকিৎসা সনদ বাতিল করে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে অ’পমান এবং মুক্তিযু’দ্ধকে অব’মাননা করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচী পালন করা হবে।

এছাড়াও গতকাল সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযো’দ্ধা মো. শাজাহান ভুঁইয়াকে দেখনে যান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তারপর তিনি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, জেলা প্রশাসকের সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে; তার পক্ষে যতটুকু সম্ভব তিনি ততটুকু করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারের এত সাহস হলো কী করে যে তিনি মুক্তিযো’দ্ধার সনদ ছিঁড়েন? আমি মনে করি এ ঘটনায় মুক্তিযো’দ্ধাদের অ’পমান করা হয়েছে। মুক্তিযো’দ্ধা শাজাহান যথাযথ নিয়মে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু চিকিৎসক তাকে চিকিৎসার বদলে চরম অ’পমান করেছেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ চিকিৎসককে বরখা’স্ত, গ্রেপ্তার এবং তার ডাক্তারি সনদ বাতিলের দাবি করেছেন।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের রসুলপুর মহেড়া গ্রামের বীর মুক্তিযো’দ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়া কোমর ও পায়ের জয়েন্টের হাড়ের ফ্র্যাকচারের কারনে গত ১৭ নভেম্বর চিকিৎসা নিতে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরে ২১ নভেম্বর হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার সকালে ভিজিট করতে এসে রোগির ফাইল দেখেন। ফাইলে রাখা বীর মুক্তিযো’দ্ধা শাজাহানের মুক্তিযু’দ্ধের সনদ দেখে কোনো কারন ছাড়াই ক্ষি’প্ত হন এবং চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘এই সনদ কি রোগীর চিকিৎসা করবে, না ডাক্তার করবে?’ এ কথা বলে সনদটি ছিঁড়ে ফেলে দেন। ডাক্তারের এমন অপেশাদার আচরণে আশপাশের লোকজন হতবাক হয়ে যান।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযো’দ্ধা শাজাহান ভূইয়ার জামাতা আল আমিন বলেন, আমার শ্বশুর একজন বীর মুক্তিযো’দ্ধা। মুক্তিযো’দ্ধা হিসেবে তিনি সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। মুক্তিযু’দ্ধের সনদ দেখিয়েই ভর্তি করানো হয় এবং রোগীর ফাইলে তা রাখা হয়।

এ ক্ষেত্রে ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার ওই সনদ দেখে কেন ক্ষি’প্ত হয়ে তা ছিঁড়ে ফেললেন আমি বুঝতে পারলাম না। আমি মনে করি এ ঘটনায় মুক্তিযো’দ্ধাদের অ’পমান করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

এদিকে এই ঘটনায় গতকাল সোমবার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, ঘটনাটি তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সদরউদ্দিনকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ডা. শহীদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!