হার্ডলাইনে যাওয়ার অপেক্ষায় বিএনপি, চলছে ‘টেস্ট রান’

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

হঠাৎ করেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি বিএনপির সহযোগি সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযো’দ্ধা দলের আকস্মিকভাবে সুপ্রীম কোর্টের সামনে অবস্থান গ্রহণ এবং গাড়ী ভা’ঙচুরের ঘটনার পর সরকার এবং বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভা’ঙচুর অগ্নি-সংযোগ জ্বা’লাও পোড়াওয়ের রাজনীতিকে কোনভাবেই বরদা’স্ত করা হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যে ধ্বং’সাত্মক রাজনীতির পথ থেকে সরে আসেনি এই ঘটনা তার প্রমাণ। সরকার যে কোনো মূল্যে সরকারের জান মাল হেফাজতে বদ্ধ পরিকর।

তিনি বলেন যে, যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তাদের বিরু’দ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে হঠাৎ করেই বিএনপি সরকারের বিরু’দ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সরকারবিরো’ধী আন্দোলনকে বেগবান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, মুক্তিযো’দ্ধা দলের সমাবেশ থেকে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান ছিল একটি পরিকল্পিত কর্মসূচী। এটা ‘টেস্ট রান’। সামনে বিএনপি এরকম আরো বড় বড় কর্মসূচী গ্রহণ করবে।

বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপির সামনে আর কোন পথ নেই। শক্ত আন্দোলন ছাড়া বিএনপি বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত বা অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারবে না সেটা আজ প্রমাণিত। তাই বাধ্য হয়ে বিএনপিকে এমন আন্দোলনের পথে যেতে হচ্ছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এটাও বলেছেন যে, বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা আন্দোলন চায় কিন্তু শীর্ষ নেতাদের অনাগ্রহের কারণে এতদিন আন্দোলন হয়নি। এখন তৃণমূলের চাপে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।

কিন্তু বিএনপির ঘনিষ্ঠ সুত্রগুলো বলছে, তারা মনে করছে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি, পেঁয়াজের দাম, নিরাপদ সড়ক আইনসহ নানা বিষয়ে সরকারের জনপ্রিয়তায় এখন ভাটার টান পড়েছে। তাছাড়া সরকারের যে দেশের উপর সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে পড়েছে, এই পরিস্থিতিতে একটা আন্দোলন করে সরকারকে অ’স্বস্তিতে ফেলা সহজতর হবে।

বিএনপির নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন, যদি আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন না হয় তাহলে তারা ১ দফা আন্দোলনে যাবে।

উল্লেখ্য, আপিল বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চেয়েছেন। বিএনপি আইনগত প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাস্তায় সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বার্তা পাঠান হয়েছে, তারা যেন আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়। এছাড়াও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোর একাধিক বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে।

তারা মনে করছে, সরকারের যে জনপ্রিয়তা এবং কর্তৃত্ব দুটোতেই এখন ভাটার টান। তাই এখনই আন্দোলনের সময়। তবে সরকারও বিএনপির আন্দোলন চা’ঙ্গা হওয়ার আগেই তা কঠোরভাবে দ’মন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতাকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর গ্রেপ্তারের আ’তঙ্কেও ভুগছে বিএনপিও।

সরকার এবং বিএনপির এই মুখোমুখি অবস্থানে সামনের দিনগুলোতে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তে’জনার সৃষ্টি হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!